টানা ৪০ ঘন্টার অভিযানে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মাহতাবপুর এলাকায় আলোচিত এক শিশু গণধর্ষণের ঘটনার মূল আসামি মিজান (২০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে বিশ্বনাথ উপজেলার বশিরপুর গ্রামের আশিক মিয়ার ছেলে।
মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ টিম সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানাধীন পাথারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, গত ২৫ মে রাতে আসামি মিজান ও তার সহযোগিরা প্রেমের সম্পর্কের সুবাধে ১৪ বছরের এক শিশুকে ফুসলিয়ে বাড়ির পাশে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর আসামিপক্ষের লোকজনসহ স্থানীয় কিছু লোক ঘটনাটি আপসে রফাদফার চেষ্টা করেন। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো লুৎফর রহমানের মাধ্যমে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ঘটনার সংবাদ পেয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ভিকটিমের পক্ষ থেকে এজাহার সংগ্রহ করে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন। পরে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে দেন। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামী গ্রেফতার করার জন্য মামলা তদন্তে সার্বিক তদারকির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো, লুৎফর রহমানকে দায়িত্ব দেন।
পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার মূল আসামি মিজানকে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। এরই মধ্যে স্থানীয় কিছু লোকজনদের প্ররোচনায় ঘটনাটি আপোসের রফাদফা চলতে থাকায় কৌশলগত কারণেই আসামীকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে অনেক বেগ পোহাতে হয়।
এক পর্যায়ে গত ৮ জুলাই বিশ্বনাথ এলাকায় প্রধান আসামি মিজানের উপস্থিতির সন্ধান পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। তবে আসামীর নিকট আত্নীয়স্বজন পুলিশের ন্যায় সঙ্গত কাজে বাঁধা দিয়ে আসামীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। এ অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধীকে আশ্রয় দিয়ে আইনের অমাণ্য করার দায়ে জেলা পুলিশ আশ্রয়দাতাদের গ্রেফতার করে নিয়মিত মামলা রুজু করে। পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে এক পর্যায়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার এসএমপির জালালাবাদ থানা, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানা এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা এলাকায় টানা চল্লিশ ঘন্টার টানা অভিযান পরিচালনা করে অবশেষে ঘটনায় জড়িত মূল আসামি মিজানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যপারে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন, ধর্ষণের মত সমাজের ঘৃন্য অপরাধ সামাজিক বিচার সালিশের কোন সুযোগ নেই। এ ঘটনায় আসামীর আশ্রয় দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা সমাজে একটা বার্তা দিতে চাচ্ছি যেন ভবিষ্যতে এরকম ঘৃন্য অপরাধীদের আশ্রয় দিতে সবাই সতর্ক হয়। জেলা পুলিশের একাধিক টিম বিরামহীন প্রচেষ্টার ফলে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে যোগ করেন তিনি।
প্রতিনিধি