ডেস্ক নিউজ : ব্যক্তি ও জাতির স্বার্থে জনগণকে সঞ্চয়ে উত্সাহিত করে ইসলামী ব্যাংক। অনগ্রসর ও পশ্চাত্পদ জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়তে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটি।
জনগণের সঞ্চয়ের বিশ্বস্ত আমানতদার হিসেবে ব্যাংকটি কাজ করছে বলে জানায় ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ইসলামী ব্যাংক সূত্র জানায়, বর্তমানে বেসরকারি এই ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ৭৬ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের তুলনায় ২০১৮ সালের একই সময়ে ব্যাংকটির আমানত বেড়েছে ছয় গুণেরও বেশি। ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকটির আমানত বাড়ার হার ছিল ১০ শতাংশ, যা ২০১৮ সালের একই সময়ে ১২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ বলছে, কোটি গ্রাহকের আস্থার এই ব্যাংকটি শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সব মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের অনন্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। চলতি বছরে ব্যাংকটির গ্রাহকসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তিন লাখেরও বেশি নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। ব্যাংক খাতে দেশের সর্বোচ্চ দুই লাখ ৫০ হাজার স্কুল ব্যাংকিং হিসাব বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের। এই ব্যাংক বর্তমানে সোয়া কোটি গ্রাহকের ব্যাংক। ব্যক্তি ও জাতির স্বার্থে জনগণকে সঞ্চয়ে উত্সাহিত করে ইসলামী ব্যাংক। অনগ্রসর ও পশ্চাত্পদ জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়তে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটি।
গ্রাম ও শহরের অর্থনৈতিক বৈষম্য কমিয়ে এবং বণ্টনমূলক সুবিচার নীতি অনুসরণ করে বিনিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক দেশের টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। পর্যাপ্ত তারল্য নিয়ে ব্যাংকটি তার স্বাভাবিক বিনিয়োগ কার্যক্রম চলমান রেখেছে। শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য চালু করা বাংলাদেশ ব্যাংকের বন্ডে ইসলামী ব্যাংকের পর্যাপ্ত তহবিল সংরক্ষিত আছে বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সফল সহযোগী ইসলামী ব্যাংক। দেশের বৃহত্তম ব্যাংক হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আমদানিনির্ভর বিনিয়োগ রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ সময়ের তুলনায় ২০১৮ সালের একই সময়ে ব্যাংকের আমদানি বাণিজ্য বেড়েছে ৩৫ শতাংশ।
প্রবাসী গ্রাহকদের প্রথম পছন্দের ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। সূত্র জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনতে ইসলামী ব্যাংক জন্মলগ্ন থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। রেমিট্যান্স আহরণে ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ইসলামী ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৬ শতাংশ। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আহরণ বাড়িয়ে জাতীয় রিজার্ভে (বিদেশি মুদ্রার মজুদ) উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে এই ব্যাংক।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ইসলামী ব্যাংকের অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য। অধিকসংখ্যক গ্রামীণ জনপদে এই ব্যাংকের সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক এ পর্যন্ত ৯৫টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট চালু করেছে। আরো এজেন্ট আউটলেট খোলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক ১৯৯৫ সালে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প (আরডিএস) চালু করে। এ প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি, দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ, সঞ্চয় গঠন, বিভিন্ন আয়-উত্সারী কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগ এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে।
মানবসম্পদ উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে ইসলামী ব্যাংক। তারুণ্যদীপ্ত, সৎ, যোগ্য ও চৌকস নারী-পুরুষের সমন্বয়ে গঠিত এক দল পেশাদার কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এই ব্যাংক। সৎ ও আত্মবিশ্বাসী কর্মী বাহিনীই এই ব্যাংকের বড় সম্পদ। এই কর্মীরা গ্রাহকসেবায় সদা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ পর্যন্ত বেশ কিছু পদক পেয়েছে ব্যাংকটি। বিশ্বের শীর্ষ এক হাজার ব্যাংকের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক। এ ছাড়া ব্যাংকটি দেশের ব্যাংক খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ করদাতা প্রতিষ্ঠানও বটে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ইসলামী ব্যাংক সম্প্রতি সাফা পদক পেয়েছে।
মূলধারার ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক নানা জনহিতকর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আর্তমানবতার সেবায় ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন দেশব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিক, হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, স্কুল ও মাদরাসা পরিচালনা করছে।
ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, এই সব কিছুর পেছনে রয়েছে ব্যাংকটির গ্রাহকদের উজাড় করা ভালোবাসা, দেশবাসীর আকুণ্ঠ সমর্থন। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অভিযাত্রায় গ্রাহকের সীমাহীন আস্থা ব্যাংকটির আগামী দিনের অনুপ্রেরণা।