অনলাইন ডেস্ক: কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) হাত-পা-মুখ বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আবদুল মতিন নামে ৬০ বছর বয়সী এক রিকশাচালকের বিরুদ্ধে। তিনি সম্পর্কে ওই কিশোরীর নানা হন। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার শ্রীমদ্দি গ্রামে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ দিন সকালে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, ‘সেদিন আমি এবং আমার স্বামী ক্ষেতে কাজ করছিলাম। আমার মেয়ে আর তিন বছরের ছেলে ঘরে ঘুমাচ্ছিল। এই সুযোগে মতিন আমার মেয়ের হাত, পা, মুখ বেঁধে ইজ্জত নষ্ট করে।’
আজ শনিবার সকালে ভুক্তভোগীর চাচা নবী বলেন, ‘আমরা কুমিল্লা যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিয়েছি। এই সময় আসামি মতিনের ছেলেরা এসে আমাদেরকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভয় দেখাচ্ছে।’
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ধর্ষক আবদুল মতিন ভুক্তভোগীর মামার শ্বশুর। আসামি সম্পর্কে ভুক্তভোগীর নানা এবং তাদের প্রতিবেশী।
ওই কিশোরী উপজেলা সদরের খাদিজা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার সকালে সে ও তার ছোট ভাই তাদের ঘরে চৌকিতে ঘুমাচ্ছিল। এমন সময় ধর্ষক মতিন ঘরে ঢুকে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে দরজার খিল আটকে দেয়। পরে তার গায়ের ওড়না দিয়ে তার হাত, পা ও মুখ চৌকির সঙ্গে বেঁধে ফেলে এবং তাকে ধর্ষণ করে।
এ সময় হোমনা সদরে যাওয়ার উদ্দেশে তাদের ঘরের পাশ দিয়েই যাচ্ছিল ভুক্তভোগীর চাচাতো বোন কুলসুম বিবি। তিনি জানান, এ সময় মতিনের লুঙ্গির বাঁধন খোলা এবং হাতে ধরা অবস্থায় ভুক্তভোগীর ঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে পালিয়ে যেতে দেখেন। আব্দুল মতিনের লুঙ্গির পেছনে ভেজা দাগও দেখতে পান বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ঘর থেকে গোঙানির শব্দ শুনে কুলসুম বিবি ঘরে ঢুকে ওই কিশোরীর মুখ ও দুই হাত বাঁধা ও উলঙ্গ অবস্থায় কাঠের চৌকির ওপর দেখতে পান।
এ ঘটনার বর্ণনা শুনে ভুক্তভোগীর চাচী ফাতেমা বেগম অজ্ঞান হয়ে যান। তার চিকিৎসায় ছোটাছুটি করতে গিয়ে অভিযোগ দায়েরে একদিন পিছিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা আছে।
পরে শুক্রবার ৮নং পৌর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল কাদিরের সহায়তায় হোমনা থানায় মামলা করেন ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবার।
৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল কাদির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভিকটিমের সুবিচার পাওয়ার জন্য তার পরিবারকে আইনিভাবে সহযোগিতা করেছি।
এ বিষয়ে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, ‘ঘটনা শুনেই পদক্ষেপ নেই। গিয়ে জানতে পারি, আসামি নদী পার হয়ে অন্য উপজেলায় চলে গেছেন, সেখানেও আমরা অভিযান চালাই। আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মতিনের ছেলেরা ভয়ভীতি দেখালে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রতিনিধি