অনলাইন ডেস্ক: এক দম্পতির বিরুদ্ধে তাদের আড়াই মাসের কন্যা শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনে তারা কাজ হারিয়ে অর্থাভাবে নিজের সন্তানকে মাত্র আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করেন। পরে পুলিশ ওই শিশুটিকে উদ্ধার করেছে।
বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাযর ঘাটালের বাসিন্দা বাপন ধাড়ার স্ত্রী সওয়া আড়াই মাস আগে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বাপন ধাড়া মুম্বাই, হায়দ্রাবাদসহ নানা শহরে ঘুরে শ্রমিকের কাজ করেন। তার স্ত্রীও গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে দুজনেই কাজ হারিয়ে আর্থিক কষ্টে পড়েন। পরে কয়েক দিন আগে, হাওড়ার এক দম্পতির কাছে মেয়েকে বিক্রি করে দেন তারা।
শিশু বিক্রির খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর বিশ্বনাথ সামন্ত। তিনি বলেন, ‘এরা সত্যিই খুব দরিদ্র। ঘরে কোথাও ত্রিপল টাঙানো, কোথাও টালি লাগানো। আমরা যখন জানতে চাই যে কেন সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন, তখন ভদ্রলোক বলেন বিক্রি নয়, সন্তানকে লালন-পালন করার জন্য এক দম্পতিকে দিয়েছেন ‘
তিনি বলেন, ‘আমরা চেপে ধরি, তাহলে টাকা নিলেন কেন? মাত্র আড়াই হাজার টাকার জন্য মেয়েকে বিক্রি করলেন?’ জবাবে তিনি আবারও সেই কথাই বলতে থাকেন। তবে আমাদের কাছে স্পষ্ট যে তিনি টাকা নিয়েই মেয়েকে বিক্রি করেছিলেন। ওই শিশুকে হাওড়া জেলা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
বিশ্বনাথ সামন্ত বলেন, ‘পরিবারটি দরিদ্র ঠিকই। কিন্তু শিশুটি যদি ছেলে হত, তাহলে কিন্তু তিনি বিক্রি করতেন না। আমাদের কাছে তিনি স্পষ্টই বলেছেন এটা। মেয়েকে বড় করা, বিয়ে দেওয়া এসব দায়িত্ব পালন করতে এখনও বহু পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়ে। মাঝে মাঝে নিজেদেরই দোষী মনে হয় যে আমরাই বোধহয় সচেতন করতে পারি নি মানুষকে।’
শিশু বিক্রি করা ওই বাবাকে জেরা করছে পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। শিশুটির মা অপর এক মেয়েসহ নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রতিনিধি