পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মানুষের ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশের মধ্য দিয়ে গতরাতেও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। নিউ ইয়র্ক সিটি সহ কোন কোন এলাকায় প্রতিবাদকারীরা কারফিউ অমান্য করে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে শত শত লোক ব্রুকলিন ব্রিজের উপর অবস্থান গ্রহণ করে ম্যানহাটান যাবার পথে , তবে সেই পথটি পুলিশ অবরোধ করে রাখে। অ্যাটলান্টায় পুলিশ শত শত লোকের উপর কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে যখন তারা রাত ৯টায় কারফিউ শুরুর পরে ও রাস্তায় সমবেত হতে থাকে। দেখা গেছে দুটি শহরেই পুলিশ লোকজনকে গ্রেপ্তার করে। দ্য এসোসিয়েটেড প্রেস বলছে গত সপ্তায় গোটা দেশে পুলিশ অন্তত ৯,৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কারফিউর সময় পেরিয়েও শত শত লোক হোয়াইট হাউজের উল্টো দিকে ওয়াশিংটনের লাফায়েত স্কোয়ার পার্কে সমবেত হয়। ঐ পার্কে সমবেত বিক্ষোভকারীরা ,
শ্লোগান দেয়। কয়েক কিলোমিটার দূরেই ন্যাশনাল গার্ডের সৈন্যরা লিঙ্কন মেমোরিয়ালের সিঁড়ির চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকে । লিঙ্কন মেমোরিয়াল হচ্ছে একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান যেখানে ১৯৬৩ সালে মার্কিন লুথার কিং জুনিয়র , আই হ্যাভ এ ড্রিম ..সেই বিখ্যাত ভাষণটি দিয়েছিলেন।গত রাতে হাজার হাজার লোক লস এঞ্জিলিসে মিছিল করে যেখানে মেয়র এরিক গারসেটি , পুলিশের সঙ্গে একত্রে হাঁটু গেড়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষনা করেন। তা ছাড়া মায়ামি , হিউস্টন , অরল্যান্ডো , নিউ অরলিন্স , সিয়েটল , পোর্টল্যান্ড , অরেগনসহ বিভিন্ন শহরে জনসাধারণ প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ গ্রহণ করে। এই বিক্ষোভের সূচনা এক সপ্তারও আগে মিনিয়াপলিসে যখন ৪৬ বছর বয়সী একজন আফ্রিকান আমেরিকান লোক ফ্লয়েডের গলার উপর একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কয়েক মিনিট ধরে তার হাঁটু গেড়ে রাখে এবং পরে কৃষ্ণাঙ্গ লোকটি মারা যায়।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুয়েটেরেস বলেন তিনি মর্মাহত বোধ করছেন। তিনি বলেন , অভাব অভিযোগের কথা শুনতে হবে , তবে তা প্রকাশ করতে হবে শান্তিপূর্ণ ভাবে এবং কর্তৃপক্ষকেও বিক্ষোভের প্রতি সংযত আচরণ করতে হবে। গুয়েটেরেস বলেন বর্ণবাদকে আমাদের সকলেরই ঘৃণা করতে হবে। আজ পোপ ফ্রান্সিসও তাঁর কথায় যুক্তরাষ্ট্রে এই অশান্ত অবস্থার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পোপ বলেন আমরা কোন মতেই বর্ণবাদকে সহ্য করতে পারিনা , বর্ণবাদ থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখতে পারিনা। তিনি ফ্লয়েড এবং যারা এই বর্ণবাদের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য প্রার্থনা করেন।
এ দিকে মঙ্গলবার প্রকাশিত রয়টারের এক জরিপে দেখা গেছে , প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ বিক্ষোভকারীরদের প্রতি সহানুভূতিশীল , ২৭ শতাংশ সহানুভূতিশীল নয় এবং ৯ শতাংশ তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত নয়। ঐ একই জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্প যে ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন ৫৫ শতাংশ তার সঙ্গে একমত নন। ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন যে তিনি সকল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীর বন্ধু তবে একই সঙ্গে তিনি একাধিক টুইট বার্তায় শহরগুলোতে শান্তি বজায় রাখার জন্য শক্তি প্রয়োগের কথাও বলেছেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান