Home » ক্রেতা বেড়েছে ঈদবাজারে, সন্তুষ্ট নয় বিক্রেতারা

ক্রেতা বেড়েছে ঈদবাজারে, সন্তুষ্ট নয় বিক্রেতারা

করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ অনেকটা গৃহবন্দি থাকায় জমে উঠছে না রাজধানী ঢাকার ঈদবাজারগুলো। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও তা সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, করোনার কারণে ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসছে না। গোটা দিনে স্বাভাবিক দিনের মতোও বিক্রি হচ্ছে না। অতীতের ঈদ মার্কেটের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক হচ্ছে এবারের ঈদবাজার।

শুক্রবার সকালে মিরপুর নিউমার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতাদের যথেষ্ট চাপ রয়েছে। মার্কেটের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা জানান, তুলনামূলক ক্রেতা বেড়েছে। তবে তা স্বাভাবিক দিনের চেয়ে বেশি নয়। আর যারা আসছেন তারাও বেশি কেনাকাটা করছেন না। অনেকে ঘরে আবস্থানরত প্রিয়জনদের জন্য কেনাকাটা করেও আবার ফেরত নিয়ে আসছে। কারণ মার্কেটে না আসার ফলে তারা ট্রয়াল দিয়ে পণ্য বডি ফিটিং করে নিতে পারছে না।

জানতে চাইলে নিউমার্কেটের টপ টেনে একটি ফ্যাশন হাউজের বিক্রয় প্রতিনিধি ইকবাল উদ্দিন বলেন, অন্যান্য ঈদে যেখানে এই সময়ে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন থাকতো সেখানে এবার বসে থাকতে হচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তাই সচেতন মানুষ মার্কেটে আসছে না।

মিরপুর ১৩ নম্বরের রিয়াজ ফ্যাশন হাউজের দোকানি সাব্বির উদ্দিন বলেন, কেনাকাটার জন্য বেশি আগ্রহী নারীরা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা বাসা থেকে বের হচ্ছে না। তাই ঈদের মার্কেটগুলোও জমে উঠছে না। এর পরও যারা আসছে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ দিয়েই কর্মীদের বেতন দেওয়ার চেষ্টা করবো।

তিনি জানান, কর্মচারীদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি। মানুষেরও চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। একেবারে কাজ না করলে কর্মীদের বেতন-ভাতা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে চাকুরি করেন শেখ কামাল হোসেন। স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের জন্য ঈদ বাজার করতে এসেছেন মিরপুরের নিউমার্কেটে। তিনি  বলেন, ছেলে ও মেয়ে নতুন পোশাকের জন্য তাড়া দিচ্ছে। চাকরির খাতিরে যেহেতু বাসা থেকে বের হতে হচ্ছে তাই আজ মার্কেটেও বের হলাম। গতকাল বাচ্চার জন্য একটা প্যান্ট নিয়েছি। কিন্তু বাসায় নিয়ে দেখি সেটি তার হচ্ছে না। তাই আজ আবার ফেরত নিয়ে এসেছি। আর যেগুলো একান্ত না হলেই নয়, এমন কিছু পোশাক কিনেছি।

একই চিত্র দেখা গেছে গাউছিয়া মার্কেট সংলগ্ন ফ্যাশন হাউসগুলোতে। সেখানকার ব্যবসায়ীরাও এখন পর্যন্ত খুশি হতে পারেননি। তারা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। তবে যা বিক্রি হচ্ছে সেটা সন্তোষজনক নয়। যে পরিমাণ মানুষ আসছে সে পরিমাণ বিক্রি হচ্ছে না। যারা কেনাকাটা করছে তারাও সামান্যই করছে।

আবির ফেব্রিক্সের ম্যানেজার বিকাশ দত্ত বলেন, এই এলাকার দোকানগুলো নিন্ম ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য বেশি উপযোগী। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই শ্রেণি পেশার মানুষ। তাই ঈদের কেনাকাটায়ও তাদের উপস্থিতি কম।

স্বামীকে নিয়ে খিলগাঁও এলাকার বসবাস করেন আসমা আক্তার। দুজনই পৃথক দুইটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন। কিন্তু এবার তাদের সম্পূর্ণ বেতন-ভাতা হয়নি। বোনাসও দিতে পারেনি কোম্পানি। সে কারণে ঈদের বাজারও ইচ্ছেমতো করা হয়নি এই দম্পতির। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরে মার্কেটে আসবো আসবো বলে মনস্থির করেছি। মনে করেছিলাম, দুই জনের বেতন-ভাতা হয়ে যাবে। কিন্তু কোম্পানি অর্ধেক করে বেতন দিয়েছে। আজ আরও একটি কাজ থাকায় বের হয়েছি। নিজের জন্য একটি শাড়ি নিয়েছি। বাচ্চার জন্য এক জোড়া জুতা আর একটি জামা নিয়েছি। এর বেশি কিছু এবারের ঈদে নেওয়া হচ্ছে না।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *