মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সিলেটজুড়ে। সিলেট বিভাগের প্রত্যেকটিতে জেলাতেই ধরা পড়েছে করোনাক্রান্ত রোগী। কয়েক দিনের মধ্যেই সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) পর্যন্ত সিলেট বিভাগের চাল জেলায় করোনাক্রান্ত রোগী ছিল ৪৯ জন। এরপর শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ১৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তন্মধ্যে ৮ জনের দেহে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ফলে এ বিভাগে করোনাক্রান্তের সংখ্যা পঞ্চাশ পেরিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭-তে।
জানা গেছে, সিলেট বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনাক্রান্ত রোগী ধরা পড়ে গত ৫ এপ্রিল। ওই দিন সন্ধ্যায় জানা যায় সিলেটে চিকিৎসক মঈন উদ্দিন আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকের নাদামপুরে। ওসমানী মেডিকেল কলেজের এই সহকারী অধ্যাপক গত ১৫ এপ্রিল ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে যান।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের আকুয়া গ্রামের সাঞ্চু মিয়া নামের এক ব্যক্তি করোনাক্রান্ত বলে জানা যায় ৫ এপ্রিল রাতে। এর আগের দিন ওই ব্যক্তি করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার শরীরের প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পরীক্ষা করা হয়। সেখানে ধরা পড়ে তিনি পজিটিভ ছিলেন।
এদিকে, গত ১১ এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলায়ও ধরা পড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। তিনি একজন চালক। নারায়ণগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জে এসেছিলেন তিনি।
গত ১২ এপ্রিল সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার এক নারী করোনাক্রান্ত বলে সনাক্ত হন। তার নমুনা সিলেটে এএমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। বর্তমানে তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পরদিন (১৩ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের সদরের আরেক নারী করোনা পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়েন। এ নারীর নমুনাও ওসমানীতে পরীক্ষা করা হয়।
গত ১৬ এপ্রিল সিলেটের গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার দুই যুবক করোনাক্রান্ত বলে সনাক্ত হন।
গত ২০ এপ্রিল হবিগঞ্জের ১০ জন করোনাক্রান্ত বলে ধরা পড়েন। তন্মধ্যে জেলার লাখাই উপজেলার ৩ জন, বানিয়াচংয়ের ৩ জন, আজমিরীগঞ্জের ২ জন এবং বাহুবল ও চুনারুঘাটের ১ জন করে রয়েছেন।
পরদিন (২১ এপ্রিল) হবিগঞ্জের লাখাই ও আজমিরীগঞ্জের আরো দুই ব্যক্তি করোনাক্রান্ত বলে সনাক্ত হন।
গেল ২২ এপ্রিল সিলেটে ১৩ জন রোগী সনাক্ত হন। তন্মধ্যে ৫ জন হবিগঞ্জ জেলার, সুনামগঞ্জের ৪ জন, সিলেট ও মৌলভীবাজারের ২ জন করে। এর মধ্যে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের এক স্টোর কিপারও রয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) ওসমানীর ল্যাবে ১৪৯টি নমুনা পরীক্ষায় একদিনে ১৬ জন করোনাক্রান্ত রোগী সনাক্ত হন। তন্মধ্যে সিলেটের ৫ জন, সুনামগঞ্জের ৮ জন ও হবিগঞ্জের ৩ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন স্টোরকিপার রয়েছেন।
সর্বশেষ কাল শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) রোগী সনাক্ত হয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে হবিগঞ্জের ৫ জন, মৌলভীবাজারের ২ জন ও সুনামগঞ্জের ১ জন রয়েছেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান