Home » করোনার এই সময়ে সাহরি ও ইফতারে যেসব খাবার খাবেন

করোনার এই সময়ে সাহরি ও ইফতারে যেসব খাবার খাবেন

পবিত্র রমজান মাস এলেই রোজাদারদের খাবার গ্রহণের সময়সূচি ও উপাদানে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। বেশির ভাগ পরিবারই তিন বেলা- ইফতার, রাতের খাবার ও সাহরিতে খাবার খেয়ে থাকেন। অনেকে আবার দুই বেলা খান, বাদ দেন রাতের খাবার। আবার অনেকেই সাহরিতে তেমন কিছু মুখে দিতে পারেন না।

অভ্যাসের বৈচিত্র্য থাকলেও সুস্থতার জন্য প্রত্যেকেরই মোটামুটি ক্যালরি মান বজায় রাখা উচিত। আর এবারের রমজানে ক্যালরির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক খাবার গ্রহণের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। যেহেতু দেশজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। তাই এ থেকে নিরাপদ থাকতে রমজানে চাই বাড়তি সচেতনতা।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো- ব্যক্তিগত সচেতনতা গড়ে তোলা এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ ইমিউন সিস্টেম বাড়িয়ে তোলা। যে কোনো ভাইরাস হলো প্রোটিন যুক্ত অণুজীব। যার কারণে মানুষ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এমনকি মারাত্মক নিউমোনিয়ায় (নতুনভাবে) আক্রান্ত হতে পারে। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেশি পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রতিদিন।

অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হলো কিছু ভিটামিন, মিনারেল ও এনজাইম। যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিক্যালের (দেহের কোষ, প্রোটিন ও DNA ক্ষতি করে এমন কিছু) বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়ে শরীরকে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। প্রধান অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো হলো :

* বিটা ক্যারোটিন * ভিটামিন এ, সি, ই * লাইকোপেন * লুটেইন * সেলেনিয়াম ইত্যাদি।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ যে খাবারগুলো বেশি করে খেতে হবে সেগুলো হলো-

* বিটা ক্যারোটিন : উজ্জ্বল রংয়ের ফল, সবজি। যেমন গাজর, পালংশাক, আম, ডাল ইত্যাদি।

* ভিটামিন এ : গাজর, পালংশাক, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, জাম্বুরা, ডিম, কলিজা, দুধজাতীয় খাবার।

* ভিটামিন ই : কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম, বাদাম তেল, বিচিজাতীয় ও ভেজিটেবল অয়েল, জলপাইয়ের আচার, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।

ভিটামিন সি : আমলকী, লেবু, কমলা, সবুজ মরিচ, করলা ইত্যাদি।

গ্রীষ্মকালে দীর্ঘ সময়জুড়ে রোজা থাকার কারণে শরীরে পানিশূন্যতার ঝুঁকি থাকে। তাই ইফতারের পরে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। বেশি চিনিযুক্ত পানীয় বা প্রক্রিয়াজাত ফলের রস (জুস) না খেয়ে, এ সময় লেবুপানি, ডাবের পানি এবং বাড়িতে তৈরি ফলের রস পান করা ভালো। রসাল ফলমূল এবং শসা, টমেটো ইত্যাদি পানিযুক্ত সবজিও শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করবে।

ইফতারে প্রচলিত পেয়াঁজু, ছোলা, ঘুগনি, চপ, কাবাব, বেগুনি ইত্যাদি বেশির ভাগ খাবারই তেলে ভাজা এবং অতি ক্যালরিযুক্ত। এসব খাবারে যত কম তেল ব্যবহার করা যায়, ততই ভালো। তেল এড়ানোর জন্য ভাজা ছোলা-বুট না খেয়ে সেদ্ধ বা পানিতে ভেজানো কাঁচা ছোলা খেতে পারেন। ভাজা খাবারের বদলে তালিকায় মাঝে মাঝে চিড়া-দই, সেদ্ধ নুডলস বা পাস্তা, নরম খিচুড়ি, ওটমিল ইত্যাদি রাখা যায়।

রোজা ভেঙে ইফতারে হঠাৎ করে খুব বেশি খাবার গ্রহণ করা ঠিক নয়। তাই বিরতি নিয়ে খাবর খাওয়াটাই উত্তম। আর বেশি করে তাজা ফলমূল খান।

সাহরি না খেয়ে রোজা রাখার অভ্যাস মোটেও ভালো নয়। এ সময় পূর্ণ আহার করবেন। এটা হবে আপনার দিনের প্রধান খাবার, অনেকটা মধ্যাহ্নভোজের মতো।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *