নিউ ইয়র্ক: বুধবার রাতে আপাতত অভিবাসন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তারপরই আতঙ্ক ছড়িয়েছে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে।
এই মুহূর্তে মার্কিন মুলুকে ভারতীয় কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লক্ষ। প্রত্যেক বছর ভারত থেকে বহু দক্ষ আইটি কর্মী আমেরিকা যান। গুগল, অ্যাপল, ফেসবুক কিংবা মাইক্রোসফটের মত সংস্থায় কাজ করেন বহু ভারতীয়। কিন্তু ট্রাম্পের ঘোষণায় রীতিমত আতঙ্কিত অনেকেই।
৩৪ বছরের হরকমল সিং আটলান্টার বাসিন্দা সফটওয়্যার ডেভেলপার। যে সংস্থা তাঁর ভিসা স্পনসর করে, তারা ইতিমধ্যেই হরকমের টিমের অনেককে বাদ দিয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন আমেরিকায় থাকায় তাঁর সন্তানেরা স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার নাগরিকত্ব পেয়েছে। তাই তাঁকে ভারতে ফিরে আসতে হলে, পরিবারের সঙ্গে তাঁরস ম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে ষযেতে পারে, এমন আশঙ্কাও রয়েছে।
আমেরিকায় ইতিমধ্যেই চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। সেইসব মার্কিনিদের চাকরির কথাই আগে ভাবা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। সেইসঙ্গে নতুন করে গ্রিন কার্ড তৈরি বন্ধ করার পথও খুলে গিয়েছে তাঁর বক্তব্যে। এই মুহূর্তে ৮ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছেন।
আর এক ভারতীয় প্রিয়াঙ্কা নাগর মাইক্রোসফটে কর্মরত। আপাতত ভারতে রয়েছেন তিনি। বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকায় ফিরতে পারছেন না। তিনি ও তাঁর স্বামী দু’জনেই গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন। তাঁদের এক পাঁচ বছরের সন্তানও রয়েছে, যার জন্ম হয়েছে আমেরিকায়। ট্রাম্পের ঘোষণায় শান্ত থাকতে পারছেন না তিনিও।
উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়িতে রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ, ভিসার প্রসেসও বন্ধ। বন্ধ দূতাবাস। এরই মধ্যে অভিবাসন বন্ধ রাখার ঘোষণা চিন্তায় ফেলেছে তাঁকে। তাঁর আশঙ্কা, তাঁকে হয়ত চিরকালের জন্য আমেরিকা ছাড়তে হবে।
তাঁর স্বামী ও সন্তান এই মুহূর্তে আমেরিকায়। তাঁদের সঙ্গে ভিডিও কলেই কথা সারছেন প্রিয়াঙ্কা। মেয়ে বলছে, ‘মা তুমি কবে আসবে? ভাইরাস মরে গেলে? আমি অপেক্ষা করছি।’ ফোন রেখে কেঁদে ফেলেন প্রিয়াঙ্কা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের টুইট ঘিরে সারা বিশ্বের আইটি শিল্পই এখন টালমাটাল। তিনি লিখেছেন, “অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণ থেকে বাঁচতে এবং আমাদের গ্রেট আমেরিকান নাগরিকদের কাজ বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িকভাবে অভিবাসন স্থগিত করার জন্য একটি কার্যনির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবো!”
প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনার অভাবের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের প্রভাব মারাত্মক হয়ে উঠেছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যু ও সংক্রমণের খবর মিলেছে এখানেই। ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে গত একমাসে ২২ মিলিয়ন আমেরিকান বেকারত্বের সুবিধার জন্য আবেদন করেছেন।
নির্বাহী সম্পাদক