সুলতান সুমন ::বিশ্বজুড়ে করোনার ভয়াল থাবায় হিমশিম খাচ্ছে শক্তিধর দেশগুলো। প্রতিদিনই মরছে হাজারো হাজার মানুষ। আর আক্রান্ত হচ্ছেন লাখে লাখ। বাংলাদেশেও প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। দেশের সবচাইতে বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন ঢাক, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ বেশ কয়েকটি জেলায়। সিলেট বিভাগেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ পর্যন্ত সিলেটে যারাই আক্রান্ত তাদের বেশিরভাগ ঢাকা ফেরত।
এদিকে, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ১১ এপ্রিল সিলেটকে লকডাউন ঘোষণা করা হয় । এতে করে বাইরে থেকে সিলেটের ভেতরে প্রবেশ ও সিলেট থেকে বাইরের জেলায় যাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা হয়। এর পূর্বে গত ২৬ মার্চ বাস, ট্রেনসহ সকল পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। যা এখনও বলবৎ রয়েছে। কিন্তু এতো সকল বিধিনিষেধ অমান্য করে প্রায় দুইশত যাত্রী নিয়ে তিনটি বগির একটি ট্রেন শনিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫ টায় সিলেট এসে পৌঁছায়। ট্রেনের সকল যাত্রীর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ- নরসিংদি-কিশোরগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলার যাত্রী নিয়ে আসে। ওই সকল যাত্রীদের মধ্যে কোন সচেতনতাও ছিল না বলে জানিয়েছেন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের একাধিক সূত্র । এছাড়া ট্রেনে চড়ে সিলেটে আসা বেশ কয়েকজন যাত্রী বলছেন- তারা ঢাকা থেকে আসছেন। খবর পেয়ে রাত সোয়া ৮টার দিকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরশাদ মিয়া। স্টেশনে গিয়ে তিনি লকডাউন থাকা সত্বে এতো লোক সিলেটে আসার কারণ জানতে চান।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এরশাদ মিয়া জানান- স্টেশন ম্যানেজার খলিলুর রহমান বলেছেন, বেতন নিতে তাদেরই লোক এসেছেন। এছাড়াও যারা এসেছেন তাদের তথ্য নেওয়া হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিলেটের সুশীল সমাজের একাধিক নেতৃবৃন্দ জানান, সিলেট লকডাউন। তারপরও ট্রেন কিভাবে আসে..? তা ভাবার বিষয়। আরা ট্রেনে অন্য জেলা থেকে যারা এসেছে তাদের মধ্যে হয়তো কেউ করোনা আক্রান্ত হতে পারে বা করোনা আক্রান্ত এমন কোন এলাকা থেকে এসেছে। আর যদি এমন হয়। তাহলে সিলেটে আগত ওই সকল ট্রেন যাত্রীরাই সিলেটে করোনার বিস্তার ঘটাবে। তাই দ্রুত আগত সকল যাত্রীকে খুজে বের করে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে দেয়া উচিত।
সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মন্ডল জানান, করোনাভাইরাস মারাত্মক ছোঁয়াছে। আর বেশি লোক সমাগমে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লকডাউনে এতো লোক একসাথে অন্য জেলা থেকে সিলেটে আসা অত্যন্ত দুঃখজনক। আগত সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা উচিত।
সিলেট জিআরপি থানার ওসি আব্দুস সাত্তার জানান, সিলেটে ট্রেন আসবে এমন খবর তাকে অবহিত করেননি কর্তৃপক্ষ। তবে পরে তিনি খবর নিয়ে জেনেছেন। যারা এসেছিলেন তারা সবাই রেলওয়েতে কর্মরত। আর আগত সবাই আবার চলেও গেছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান, আগে থেকেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে প্রত্যেক বাসিন্দাদের আশপাশের কেউ অন্য জেলা থেকে এলে হোম কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন থাকতে হবে।
নির্বাহী সম্পাদক