প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রভাবে কুড়িগ্রামে কমে গেছে সবজির বাজার। কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে হতাশা বাড়ছে সবজি চাষিদের। এখন প্রতিটি লাউ ৪ টাকা আর বেগুন ও শসা দু’টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। তাও ক্রেতা না পাওয়ায় ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে সবজি। তবে খুচরা বাজারে দামের তারতম্য রয়েছে অনেকে।
সরেজমিন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ও কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের সবজি চাষিদের কথা বলে জানা গেছে, ক্রেতা সংকটের কারণে বেশীরভাগ সবজির দাম কমে গেছে। এখন প্রতিটি লাউ ৪ টাকা এবং বেগুন ও শসা দেড় টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। করলা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫ টাকা কেজিতে। তারপরও ক্রেতা মিলছে না। পানির দামে সবজি বেচে জমি থেকে সবজি ওঠানো ও পরিবহন খরচ না ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে সবজি।
হলোখানা ইউনিয়নের সন্ন্যাসী গ্রামের সবজি চাষি মো. ফারুক মিয়া জানান, তিনি অন্যের জমি লিজ নিয়ে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে লাউ, বেগুন, শিম, বরবটিসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ করেছেন। বর্তমানে বেগুন আর লাউ ক্ষেত থেকে তুলে হাটে নিয়ে গেলে বিক্রি করে খরচ ওঠে না। তাই ক্ষেতেই পড়ে আছে সবজি। ইতিমধ্যে লাউ ক্ষেতের অর্ধেক ভেঙে ফেলেছেন।
একই গ্রামের শসা চাষি শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ৩০ শতক জমিতে শসা চাষ করেছেন। খরচ পড়েছে ৪০ হাজার টাকা। অথচ এ পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন শসা। বর্তমানে শসার দর ৬০-৭০ টাকা মণ। স্থানীয় ক্রেতা নেই। বাইরের ক্রেতারাও কিনতে আসছেন না।
অনেকে ক্ষেত থেকে সবজি তুলে হাটে নিয়ে গেলেও বিক্রি করতে পারছে না। বাইরে থেকে সবজির পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা না আসায় সবজির চাহিদা একেবারে কমে গেছে। ফলে সবজি চাষ করে এখন লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামের কৃষক ওয়াহেদ আলী জানান, অনেক খরচ করে চরে করলা আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন তিনি। হাটে এনে ২০০-২৫০ টাকা মণ দরে করলা বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করলা মাঠ থেকে তোলার খরচই উঠছে না। তবে পাইকারি বাজারে সবজির দাম না থাকলেও খুচরা বাজারে এখনও অনেক সবজির দাম বেশী বলে জানিয়েছেন একাধিক ক্রেতা।
কুড়িগ্রাম জিয়া বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান আলী জানান, খুচরা বিক্রেতারা না আসায় সবজির চাহিদা কমে গেছে। ফলে মোকামে চাহিদা না থাকায় কৃষক পর্যায়ে সবজির দাম পড়ে গেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে কিনা সন্দেহ।
নির্বাহী সম্পাদক