Home » কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে আহত কিশোরীর মৃত্যু

কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে আহত কিশোরীর মৃত্যু

প্রতিনিধি সাদিকুল আমিন শিপু: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির কাটা তারের সাথে রাখা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে দগ্ধ হওয়া আহত সেই কিশোরী মৃত্যু হয়েছে।

নিহত কিশোরীর নাম লাকি আক্তার (১২) সে কাঁঠাল বাড়ি গ্রামের নবী হোসেনের মেয়ে।

সে ২ এপ্রিল সকাল ১০.৩০ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে তার মায়ের সাথে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে যায়। মাটি থেকে প্রায় ৭ফুট উপরে বাউন্ডারির কাটা তারের সাথে ইনসুলেটর দিয়ে ১১শ ভোল্টের বৈদ্যুতিক লাইন বিপজ্জনক অবস্থায় ঝুলে ছিল।

বৈদ্যুতিক তার এমন বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল যে মেয়েটিকে ২/৩ মিনিট পর্যন্ত পুড়তে দেখেও কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। অবশেষে বিদ্যুতের লাইন থেকে বাশের সাহায্যে স্থানীয়রা সেখান থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

ওসমানী মেডিকেলে নেওয়ার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত কিশোরীর অবস্থা ৮০% পুড়ে গেছে বলে জানান, এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু ঔষধ লিখে ঢাকা মেডিকেলে স্থাপিত শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে নেওয়ার জন্যে পরামর্শ দেন। কিন্তু অর্থের অভাবে ঢাকা নিতে না পেরে দগ্ধ লাকিকে তার স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে আসেন।

পরবর্তীতে মেয়েটির মুমূর্ষুতার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম সিরাজুল ইসলাম স্থানীয় কয়েকজন নিয়ে দেখতে আসেন এবং চিকিৎসার খরচ বাবদ মেয়েটির পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেন।

কিন্তু বাড়িতে এসে উন্নত চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে বিনা চিকিৎসায় ০৫ এপ্রিল রাত ১১ টার সময় মেয়েটি মারা যায়।

সূত্রে জানা যায়, এই তার পাকার একটি খুঁটির উপর ছিল। এই খুঁটিটি ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে পড়ে। পরে অস্থায়ী ভাবে এই দেয়াদের রেলিং এর সাথে লাইনটি ইনসুলেটরের সাহায্যে আটকিয়ে দেয়া হয়। পরে আর কেউ এর খোঁজ-খবর না নেওয়াতে এটা এভাবেই রয়ে যায়।

কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম সিরাজুল ইসলামও এই বিষয়ে দায়সারা উত্তর দিয়ে বলেন, আমরা জানতাম না যে এখানে এই তার এভাবে রেলিং এর সাথে আটকানো আছে। কর্তৃপক্ষও আমাদেরকে কিছু জানায়নি। এই তার এখানে কিভাবে ইনসুলেটর দিয়ে লাগানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি দায় এড়িয়ে যান, বলেন মেডিকেলে কাজ চলতেছে হয়তো ঠিকাদার আটকে রাখতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাসুম বলেন, এই তারের বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না এবং কেউ আমাকে কখনো কিছুই বলেনি তবে খুব তাড়াতাড়ি এই তার উপরে তোলার ব্যবস্থা করবো।

এদিকে দুর্ঘটনার পরেরদিনই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়ালের কাঁটাতার থেকে বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছিন্ন করে একটি খুঁটির মাধ্যমে উপরে তোলা হয়।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *