সারাবছর খেলার মধ্যেই থাকেন। দেশে-বিদেশে দৌড়াতে হয়। ফুরসত নেই। ভাবতে হয় নিজের দল নিয়ে। আবার প্রতিপক্ষ দলকে কীভাবে ঘায়েল করতে হবে, সেই রণকৌশলও আঁটতে হয়। নিজের পারফম্যান্স নিয়েও তো ভাবনার শেষ নেই। দিন দিন আরও কীভাবে আগ্রাসী হওয়া যায়, উন্নতি করা যায়, সেদিকেও পূর্ণ মনোযোগ দিতে হয়।
সব সময় ক্রিকেট নিয়েই পড়ে থাকতে হয় তাকে। ক্রিকেটই তার ধ্যানজ্ঞান। এ মহাব্যস্তার মধ্যে রান্নাঘরের চার দেয়ালের মধ্যে যাবেন কী করে? তবে এবার একটু ফুরসত পেলেন বাংলাদেশ ওয়ানডে নারী দলের অধিনায়ক রুমানা আহমেদ।
করোনা ভাইরাসের কারণে সবাই এখন ঘরবন্দি । মাঠে খেলা নেই। বাইরে গিয়ে অনুশীলনেরও সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে ঘরের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে সময়। রুমানা জানালেন, অবসর সময়টা দারুণ কাটছে তার। আগে কোনোভাবেই মাকে রান্নাঘরে সময় দিতে পারেননি। এবার সুযোগ মিলেছে। মাকে মনের মতো করে সময় দিতে পারছেন। মায়ের তৈরি করা অনেক রেসিপির সহায়ক এখন তিনিও।
আগে এভাবে মাকে কখনো সময় দেওয়া হয়নি তার। খুলনা নগরের খালিশপুরের নয়াবাটির বাড়িতে মায়ের সঙ্গে আনন্দঘন সময়ই পার হচ্ছে রুমানার। তিনি জানালেন, ফিটনেসের দিকে নজর দিচ্ছেন বেশি। ফিটনেস ধরে রাখতে না পারলে দীর্ঘদিন পর আবার মাঠে ফিরলে স্কিলে ফেরা কঠিন হয়ে যাবে। এ জন্য খাবারদাবার থেকে শুরু করে সব কিছুতেই বিসিবির পাঠানো গাইডলাইন মেনে চলছেন।
বেশি করে পানি পান, ফলমূল, সবুজ শাকসবজি, ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি করে খাচ্ছেন, যাতে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। হালকা জিম করছেন নিয়মিত। এরই ফাঁকে মাকে সময় দিচ্ছেন। মাকে সময় দেওয়া ছাড়াও একা একা গান করা শখ তার। আর তা ভিডিও রেকর্ডিং করে ফেসবুক গ্রুপে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে বেশ মজা পান।
অবসরে এ কাজটি ছাড়াও অনেক সময় বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আড্ডায় মেতে ওঠেন। টেলিভিশনও দেখা হয় মাধে মধ্যে। তবে রুমানা মনে করেন, ঘরে থাকাটাও একটা যুদ্ধ। এ জন্য অনেক ধৈর্যশীল হতে হবে। এখন খারাপ সময়ে যাচ্ছে। তবে এক সময় এ দুঃসময় কেটে যাবে। সমাধান বের হবে। এ পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
কঠিন এ সময়ে অসহায়-দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে আহ্বান জানান রুমানা। বড় পরিসরে না হলেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক মানুষের সহায়তা করে যাচ্ছেন এই নারী ক্রিকেটার। এ খবর প্রকাশ করতে চান না তিনি। এটাই নাকি তার পরিবারের নিয়ম।
কারও সাহায্য করে তা গোপন রাখাটাই পছন্দ করেন রুমানা। তবে যার যার অবস্থান থেকে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ নারী দলের এই কাপ্তান।