মানুষ মানুষের জন্য- এরই অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্হাপন করলেন এসএমপি এর শাহপরান (র.) থানার ওসি জনাব আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
মানুষের বিপদের সময় পাশে থেকে সহযোগিতা করাই মানুষের ধর্ম। একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে যদি একটি পরিবারের মুখে হাসি ফুটে, একজন মানুষ ভালোভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখে—তাতেই হয়তো জীবনের সার্থকতা খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়।
করোনার এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পড়েছেন দৈনন্দিন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। তেমনই একটি পরিবারের বাসায় খাবার নিয়ে হাজির হলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহপরাণ (র.) থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল২০২০) বিকেলে শাহপরাণ (র.) থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সতর্কতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা কালে বিকেল পৌনে চারটার দিকে শাহপরাণ (র.) থানার সরকারি মোবাইল ফোন নম্বরে একটি কল আসে। কর্মব্যস্ততার কারণে তখনো তিনি দুপুরের খাবার সারেননি। কল রিসিভ করার পর এক মহিলা জানালেন তার স্বামী লেগুনা গাড়ির চালক। সরকারি নির্দেশনায় গাড়ি চালানো থেকে বিরত রয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহ পার হওয়ায় তার ঘরে খাবার নেই। তাদের দেড় মাসের একটি নবজাতক রয়েছে। ওই মহিলার প্রতিবেশীর একই অবস্থা, ঘরে খাবার নেই। মহিলা জানালেন, সরকারি কোনো বরাদ্দ থাকলে তাদের জন্য ব্যবস্থা করতে। ওসি জানালেন যদি সুযোগ হয় তিনি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। মহিলার নাম ও ঠিকানা জিজ্ঞেস করে ফোন রাখেন তিনি। এরপর দুপুরের খাবারের জন্য প্রস্তুতি নিলেও ওই মহিলার আকুতি মন থেকে না সরাতে পেরে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র নিয়ে ছুটে আসেন ওই মহিলার বাসায়। সেখানে গিয়ে দেখেন মহিলা দেড় মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তার স্বামী নামাজ থেকে ফিরেছেন। ওসিকে দেখে লজ্জিত আর আনন্দিত ওই মহিলা।
ওসি আরো জানালেন, মহিলা নিতান্তই নিম্নআয়ের একজন ব্যক্তির স্ত্রী। তাদের দেড় মাসের একটি সন্তান রয়েছে। অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হওয়ায় হয়তো তারা অর্থাভাবে রয়েছেন। খাদ্যসামগ্রী গ্রহণ করতে মহিলা লজ্জাবোধ করছিলেন। এসময় মহিলার পাশের ঘরের পরিবারের জন্য নেয়া খাদ্যসামগ্রী তুলে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পৌণে চারটার দিকে ফোন কল পেয়ে পাঁচটার মধ্যেই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন তিনি।
এসময় ওই বাসার মালিককে তাদের অবস্থা বিবেচনায় ঘরভাড়ার মওকূফের বিষয়ে মানবিক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি।
ওসি কাইয়ুম বিষয়টি প্রকাশ করতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর এ ক্ষুদ্র উদ্যোগ দেখে কেউ যদি অনুপ্রাণিত হন এজন্য গণমাধ্যমে তুলে ধরা
ওসি কাইয়ুমের অনুরোধে ওই মহিলার নাম ও ছবি স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হলো না।
ধন্যবাদ অফিসার ইনচার্জ কাইয়ুম চোধুরীকে তাঁর এই মহানুভবতার জন্য।
বার্তা বিভাগ প্রধান