Home » মারা যাওয়ার পর কি করোনা টেস্ট করা হবে? ক্ষোভ অসুস্থ নার্সের

মারা যাওয়ার পর কি করোনা টেস্ট করা হবে? ক্ষোভ অসুস্থ নার্সের

নিউজ ডেস্কঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের একজন নার্সকে (৩৩) জরুরিভাবে ঢাকায় পাঠানো হলেও তার টেস্ট করানো হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই নার্স।

গত শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজশাহীতে বিভিন্ন হাসপাতালে টানাহেঁচড়ার পর পরিস্থিতির অবনতি হলে বুধবার রাতে জরুরিভাবে বিশেষ ব্যবস্থায় তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাকে রাজশাহীর বক্ষব্যাধি ও সংক্রমণ রোগনিয়ন্ত্রণ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল।

গতকাল বুধবার দুপুরে ওই নার্স ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তার শরীরে যেসব উপসর্গ রয়েছে তাতে তিনি নিজেই আশঙ্কা করছেন যে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। কিন্তু তিনি বারবার দাবি জানানোর পরও তার টেস্ট করানো হচ্ছে না। এ জন্য তিনি ও তার পরিবার ভীষণ উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এখন টেস্ট না করা হলে, মারা যাওয়ার পরে কি আমার টেস্ট করা হবে? কেন এই অবহেলা? আমি নার্স হয়েও সুষ্ঠু চিকিৎসা পাচ্ছি না কেন?’

রাজশাহীর আইইডি হাসপাতাল, রোগী ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার তিনি বাসে করে ঢাকা থেকে রাজশাহীতে ফেরেন। এ সময় ইতালিফেরত এক প্রবাসী তার পাশের আসনে বসেছিলেন। প্রথমে ওই নার্স জানতেন না তার পাশের যাত্রী ইতালিফেরত। বাসায় ফিরেই তার গলা ব্যথা ও কাশি শুরু হয়।

পরদিন শুক্রবার সকালে তার ভীষণ জ্বর আসে ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখনই তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান। সেখানে তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। তাকে তখনই পাঠিয়ে দেওয়া হয় মেডিকেলের ২৩ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে। সেখানকার নার্স ও ডাক্তাররা তাকে পাঠিয়ে দেন রাজশাহীর বক্ষব্যাধি ও সংক্রমণ নিরাময় (আইইডি) কেন্দ্রে। সেখান থেকে তাকে বাড়িতে গিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়।

এদিকে বাড়িতে গিয়ে তার শ্বাসকষ্ট ও জ্বর আরও বেড়ে গেলে শনিবার এ নার্স আবারও রামেক হাসপাতালে যান। ওই সময় তার জ্বর ছিল ১০৩ ডিগ্রি। সেখান থেকে তাকে আবারও রাজশাহী সংক্রমণ নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ওইদিন থেকে তিনি সংক্রমণ নিরাময় হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন।

অবস্থার অবনতি হলে ওই নার্সকে মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভর্তির পর তার শ্বাসকষ্ট কিছুটা কমেছে।
এ দিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর তার বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার জন্য রক্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পরীক্ষার রিপোর্ট আসার কথা রয়েছে বৃহস্পতিবারের মধ্যে।

ওই রোগী জানান, তিনি চিকিৎসকদের বলেছেন, তার যেন করোনাভাইরাসের টেস্ট করানো হয়। কিন্তু কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তাররা বলছেন, তার শারীরিক পরিস্থিতি এখনও ততটা খারাপ নয়। আরও খারাপ হলে তখন টেস্ট করাবেন, তার আগে নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় মঙ্গলবার রাতে তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তবে তার সার্বিক শারীরিক পরিস্থিতির খবর রাজশাহী থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *