অনলাইন ডেস্ক
: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্ব যেন অচল হয়ে পড়েছে। ঘর থেকে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা এসেছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে। লকডাউন করা হয়েছে ছোট-বড় শহরগুলো। বিশ্ব অর্থনীতিও পড়েছে হুমকির মুখে। এ অবস্থা কতদিন চলবে!
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানান, আগামী ১২ সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসের ‘ঢেউ উল্টোপথে ঘুরিয়ে’ দিতে সক্ষম হবে ব্রিটেন।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী তিনমাসের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পুরোপুরি শেষ হতে অনেক সময় বাকি। সম্ভবত কয়েকবছর পর্যন্ত লাগতে পারে।
এ কথা ঠিক যে বিধিনিষেধ আরোপের ফলে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। এসব বিধিনিষেধ তুলে দিলে সংক্রমণের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাবে কিন্তু বড় বড় শহরগুলো যেভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে তা বেশিদিন চলতে দেওয়া সম্ভব হবে না। এভাবে সবকিছু বন্ধ থাকলে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
বিধিনিষেধগুলো প্রত্যাহার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার উপায় খুঁজতে হবে। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিষয়ক অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ মনে করেন বিশ্বের এই অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং যার তিনটি উপায় আছে। ১. টিকা দেয়া ২. বহু মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের ফলে তাদের মধ্যে এ নিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে ৩. অথবা স্থায়ীভাবে মানুষ এবং সমাজের আচার-আচরণে পরিবর্তন নিয়ে আসা।
প্রথমত, বিশ্বের মানুষ এখন ভ্যাকসিন বা টিকা আবিষ্কারের জন্য অপেক্ষা করছে। টিকা আসতে সময় লাগবে ১২ থেকে ১৮ মাস। এই টিকা গ্রহণ করলে করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে আসলেও তারা অসুস্থ হবে না। যদি মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয়, তাহলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে না।
ইতিমধ্যে আমেরিকায় এক ব্যক্তির দেহে পরীক্ষামূলকভাবে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। যেকোনো টিকা আবিষ্কার করলে সেটি প্রথমে পরীক্ষা-নিরীক্ষার করা হয় যে প্রাণির ওপর। এক্ষেত্রে বিশেষ অনুমোদন নিয়ে প্রথমেই মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, এই ভ্যাকসিন তৈরিতে যে সময় লাগবে সে সময়ের মধ্যে মানুষের শরীরে প্রাকৃতিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
আশার বিষয় হচ্ছে একবার যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় তার দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
তৃতীয়ত, অধ্যাপক উলহাউজ বলেন, বিষয়টি হচ্ছে আমাদের আচার-আচরণে স্থায়ী পরিবর্তন নিয়ে আসা যার ফলে সংক্রমণের মাত্রা বেশি না হয়।
এক্ষেত্রে অধ্যাপক উলহাউজ মনে করেন, করোনাভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কার করা গেলে অনেক জটিলতার সমাধান হবে। হাসপাতালে চিকিৎসা দেবার মাধ্যমে এই রোগের মাত্রা কমিয়ে আনা গেলে আইসিইউ বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের ওপর চাপ কমে। এটি করা সম্ভব হলে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া বা লকডাউনের আগে দেশগুলো বেশি রোগী সামাল দিতে পারবে।
প্রতিনিধি