দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে, চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৮ জন।
ইতোমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা। এই পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে সংক্রমণ রোধে সারাদেশে বাস, ট্রেন ও নৌ চলাচল বন্ধ করে দেবে সরকার।
বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রতিটি ট্রেন ও স্টেশনে সতর্কতা ব্যবস্থা নিয়েছি। এই মুহূর্তে সিলেট, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, কমলাপুর সহ বড় বড় রেল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশ করার আগে হ্যান্ড মেশিনে যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে, তারপর ট্রেনে উঠতে বলা হচ্ছে। এসব স্টেশনগুলোতে চিকিৎসকসহ রেলওয়ে স্টাফরা সহযোগিতা করছেন।
ট্রেনগুলো জীবাণুমুক্ত করতে পর্যাপ্ত জীবাণুনাশক ওষুধ নেই জানিয়ে মন্ত্রী দাবি করেন, ‘ট্রেনগুলো জীবাণুমুক্ত করতে যাত্রী ওঠার আগে আসন ও হাতলগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে। ট্রেনগুলো জীবাণুমুক্ত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলা হবে।
সচেতনতা সৃষ্টিতে স্টেশনে স্টেশনে মাইকিং করা হচ্ছে। ট্রেনে যাতায়াত করার আগে যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার করার জন্য আহ্বানও করেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
রেলপথমন্ত্রী আরও বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ যদি খুবই খারাপ অবস্থায় যায়, তখন সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গতকাল বৃহস্পতিবার লকডাউন (অবরুদ্ধ) করা হয়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা। সেখানকার ওষুধ, কাঁচামাল, মুদি দোকান বাদে সব দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন।
এর আগে সচিবালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে একমাত্র উপায় হলো লকডাউন। তাই পরিস্থিতি বুঝে, প্রবাসীদের আগামন ও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কয়েকটি এলাকা লকডাউন করার কথা ভাবছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও শিবচর এলাকায় বেশি করে (প্রবাসী) দেখা যাচ্ছে। যদি পরিস্থিতির অবনতি ঘটে তাহলে আমরা লকডাউনের দিকে যাব। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১৭ জন রোগীর মধ্যে বেশিরভাগ মাদারীপুর এলাকার, সেখানে কোয়ারেন্টিনে বেশি আছে বলে খবর পাচ্ছি, ওখানকার লোক বিদেশে থাকেও বেশি। সে জন্য ওই এলাকাটা মোর ভালনারেবল অবস্থায় আছে। আগামীতে যদি সত্যি (করোনা রোগী) বেড়ে যায়, তাহলে আমরা লকডাউন করব।আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ১৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ হাজার। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ০৫০ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫৩ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৮ হাজার ৭৯২ জন।