Home » ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকেই

ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকেই

বিশ্বজুড়ে মহামারী হয়ে ছড়িয়ে পড়ার প্রাণ সংহারক করোনাভাইরাসে সৃষ্ট স্থবিরতা বাংলাদেশের জনজীবনেও পড়েছে। সরকারের তরফে নানা প্রস্তুতির কথা বলা হচ্ছে। তবুও আতঙ্কে দিন কাটছে সাধারণের। করোনাভাইরাস সংস্পর্শজনিত হওয়ার কারণে সবাইকে সচেতন থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা। আর এরই প্রভাব পড়েছে দৈনন্দিন জীবনে।

রাজধানীর রাস্তাঘাট ও যানবাহনে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বাজারগুলোতেও মানুষের যাতায়াত তুলনামূলকভাবে কমেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করায় রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে শিক্ষার্থী ও অনেক পরিবার। অনেকেই এখন কর্মব্যস্ত রাজধানী ছেড়ে বাড়িমুখো। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবিদের অনেকের পরিবার এখন গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছেন। আর ঢাকায় যারা আছেন, তারাও খুব প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না।

বিগত কয়েকদিন এই দৃশ্য দেখা গেলেও বুধবার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে মানুষের চলাচল কমে আসতে দেখা গেছে। মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, বিমানবন্দর সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল তুলনামূলকভাবে কম। যেসব বাস যাতায়াত করছে, সে সবের অধিকাংশই তেমন যাত্রী দেখা যায়নি। কিছু বাসে অর্ধেকেরও কম যাত্রী।

দারুস সালাম জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) হুমায়ন কবীর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দেশে করোনা ধরা পড়ার পর থেকে রাস্তায় গাড়ি খুবই কম। তবে বুধবার আন্তঃজেলা বাসগুলো কিছু কিছু ছাড়লেও লোকাল বাসগুলো একদমই কমে গেছে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কিছু থাকলেও প্রাইভেট যানবাহনগুলো রাস্তায় খুবই কম।’

তিনি বলেন, ‘দুরপাল্লার বাসগুলোতে রাজধানীতে যাত্রী আসার চেয়ে যেতে বেশি দেখা যাচ্ছে। সকালে মনে হয়েছে গাবতলী বাস টার্মিনল থেকে দিনমজুর শ্রেনির লোক যারা তারাই রাজধানী বেশি ছাড়ছে। পরিবার নিয়ে কাউকে রাজধানী ছাড়তে তেমন দেখা যায়নি।’

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুরপাল্লার বাস চলাচল করছে তবে সেটা তুলনামূলক কম। করোনার বিস্তার ঠেকাতে সরকার যদি কিছু এলাকা শাটডাউন করে তাহলে আমরা বাস চলাচল বন্ধ করব। তবে এখনও তেমন কোনো নির্দেশনা আসেনি।’

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলে। এরপর প্রাদুর্ভাব বেড়ে একে একে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন দেশ লকডাউন করেছে।

বাংলাদেশেও একজনের মৃত্যুসহ ১৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি যেন বিস্তার করতে না পারে প্রয়োজন হলে সরকার বেশ কিছু এলাকা শাটডাউন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী এসবি পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ আলাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সোমবার রাত থেকে আমাদের বাসে করে তুলনামূলক বেশি যাত্রী রাজধানী ছেড়ে গেছেন। এদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই বেশি। আবার অনেকে পরিবার নিয়েও ঢাকা ছেড়েছেন।’

করোনাভাইরাসের সতর্কতার অংশ হিসেবে ১৬ মার্চ থেকে ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়। ছুটি থাকাকালীন এই সময়টিতে শিক্ষার্থীরা যেন বাড়িতেই থাকেন সেটি নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

গাবতলী বাস টার্মিনালে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের শিক্ষার্থী শাওন আহমেদের সঙ্গে। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি থাকায় তিনি রাজধানী ছাড়ছেন। তার অনেক বন্ধু দুইদিন আগেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন বলেও জানান এই শিক্ষার্থী।

এদিকে রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার রাস্তায় মানুষের সমাগম কমে এসেছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ তেমন একটা বাসা থেকে বের হচ্ছে না। করোনা নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে অনেককে অতিরিক্ত পন্য কেনাকাটা করতেও দেখা গেছে। তবে আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত পণ্য না কিনতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

সূত্র: ঢাকা টাইমস

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *