Home » ভারতে ইতালিফেরত এক করোনা রোগী মিশলেন ৮১৩ জনের সঙ্গে

ভারতে ইতালিফেরত এক করোনা রোগী মিশলেন ৮১৩ জনের সঙ্গে

অনলাইন ডেস্ক

:  ভ্রমণ শেষে ইতালি থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ফিরেছেন ৪৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। দেশটির স্বাস্থ্যসেবা অফিস জানিয়েছে, দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণের পর করোনা ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত তিনি ৮১৩ জনের সংস্পর্শে গেছেন। ইতোমধ্যে ওই ব্যক্তির মা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

ওই ব্যক্তির বাড়ি পশ্চিম দিল্লির জোনাকপুর অঞ্চলে। তিনি ১২ মার্চ ইতালি থেকে দেশে ফেরেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিশ্বের ১৫২টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত বিশ্বে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৮ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮২৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৯৯ জনের।

চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ১৫৭ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১ হাজার ৪৪১ জন।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, ওই ব্যক্তির মা (৬৮) করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তাকে দিয়ে ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২-এ দাঁড়াল।

ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ইউরোপের চার দেশ ভ্রমণ করে তিনি দেশে ফিরেছেন। এসব দেশের মধ্যে ইতালিও ছিল।

দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণের পর তিনি একাধিক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন। পরে থার্মাল সেন্সর দিয়ে তার শরীর স্ক্রিনিং করা হয়। পরীক্ষায় তার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ধরা পড়ে। এরপর তাকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং তিনি বিভিন্ন জনের সেঙ্গ মেশার সুযোগ পান।

‘বিমানে তার সঙ্গে আরও ছয়জন ছিলেন এবং তাদের সবার পরীক্ষায় রেজাল্ট আসে নেগেটিভ। প্রথম দিকে তার শরীরে করোনার কোনো লক্ষণই ছিল না এবং তিনি ইচ্ছামতো স্বাভাবিক কাজ করে যাচ্ছিলেন। পরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন’-কথাগুলো বলেন এক আত্মীয়।

জোনাকপুরে বাড়িতে যাওয়ার পর করোনা শনাক্ত হওয়া এবং এরপর আইসোলেশনে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গেও মেশেন। তার ৬৮ বছর বয়সী মা ছোট ভাইকে নিয়ে অন্য বাড়িতে থাকতেন। তিনি প্রায়ই তার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন।

পরিবারের এক সদস্য বলেছেন, ‘পরিবারের সব সদস্যের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নেগেটিভ রেজাল্ট এসেছে। শরীরে করোনা ধরা পড়ার পর তার বাড়ি অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তবে আমরা এখন সবাই ভিত। আমরা ইতোমধ্যে পরিবারের এক সদস্যকে (মা) হারিয়েছি।’

দেশটির স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালকের দেয়া তথ্য বলছে, ইতালি থেকে দেশে ফিরে করোনায় আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি ৮১৩ জনের সঙ্গে মিশেছেন। এর মধ্যে দিল্লিতে ৪০ জন এবং এর বাইরে ৭৭৩ জন।

তথ্য আরও বলছে, এর মধ্যে ১৪ জন ওই ব্যক্তির মায়ের সংস্পর্শে গেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে, ওই ব্যক্তির পরিবারের এক সদস্য বলেছেন, তার অফিস নাইদোতে (উত্তর প্রদেশের একটি শহর)। মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি দিল্লি মেট্রোতে করে অফিসে যেতেন।

ওই ব্যক্তির বাড়ি জোনাকপুরি পশ্চিম থেকে নাইদোর বোটানিকাল গার্ডেন স্টেশনের দূরত্ব ৩৮.৫ কিলোমিটার। এবং সেখানে যেতে ২৫টি স্টেশনে থামতে হয়। তাই এই যাতায়াতে তিনি ঠিক কতজনের সঙ্গে মিশেছেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব হয়নি।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ওই ব্যক্তি নাইদোর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং সেখানে সাতশোর অধিক কর্মচারী রয়েছেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *