Home » করোনা প্রতিরোধে কার্যকর মাস্ক কোনটি? কখন পরবেন

করোনা প্রতিরোধে কার্যকর মাস্ক কোনটি? কখন পরবেন

সম্প্রতি একের পর এক দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। গোটা বিশ্বেই এই ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য নতুন উপায়ও আবিষ্কার করার চেষ্টা চলছে। এই মারণ ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রাথমিকভাবে মাস্ক পরার কথাও বলা হয়েছে। তাই, সাধারণ মানুষ নিজের সুরক্ষার জন্য শুরু করেছেন মাস্ক পরা।

বর্তমানে বাজারে মাস্কের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু অনেকেই মাস্কের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন নয়। তাই, আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন মাস্কগুলো করোনা ভাইরাস এড়াতে বেশি কার্যকর এবং সেগুলো ব্যবহার করার সময় কোনদিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।

ডিসপোজেবল মাস্ক

ডিসপোজেবল মাস্ক, যাকে সার্জিক্যাল ফেস মাস্কও বলা হয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের আশেপাশে থাকা চিকিৎসক এবং হাসপাতালের নানান কর্মীরাও এটি ব্যবহার করেন। এটি চিকিৎসক এবং রোগী উভয়কেই সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তবে এটি বাতাসের ছোট ছোট কণা আটকাতে পারে না। এই মাস্কগুলো মাত্র ৩ থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি পরা উচিত নয়। এটি ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে না।

এন-নাইন্টিফাইভ রেসিপিরেটর মাস্ক

এই মাস্কটিকে অস্ত্রোপচারের মাস্কের চেয়েও বেশি কার্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এটি “ইনসাইড টু আইটসাইড” অর্থাৎ বাইরে থেকে ভেতরে ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণকে প্রতিরোধ করে। এই মাস্কটি করোনা, এইচওয়ানডাব্লিওওয়ান এবং সার্সের মতো ভাইরাসের সংক্রমণে সহায়তা করে। করোনা ভাইরাসের থেকে সুরক্ষা পেতে এন-নাইন্টিফাইভ রেসিপিরেটরের ব্যবহার বেশি কার্যকর হিসেবে বিবেচিত।  কারণ এই মাস্কগুলো ভালো ফিট। প্রায় ০.৩ মাইক্রোনের ব্যাসযুক্ত ছোট কণাগুলোকে ফিল্টার করে দেয়। এটি বাতাসে উপস্থিত ছোট কণার ৯৫ শতাংশকে অবরুদ্ধ করে।

এফএফপি-ওয়ান মাস্ক 

এটি মানের দিক থেকে ভালো নয়, সাধারণত এতে পরিস্রাবণ ৮০ শতাংশ এবং ছিদ্র ২০ শতাংশ হয়। এটি বাড়িতে ব্যবহারের দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক।

এফএফপি-টু মাস্ক 

এটি এফএফপি-ওয়ানের তুলনায় বেশি ভালো। এতে পরিস্রাবণ ৯৪ শতাংশ এবং ছিদ্র ৮ শতাংশ পর্যন্ত হয়। বর্তমানে এই মাস্কগুলো করোনাভাইরাস এড়াতে পরা হচ্ছে।

এফএফপি-থ্রি মাস্ক

বলা হয়, এটি সর্বোচ্চ মানের মাস্ক, যার মধ্যে পরিস্রাবণ সাধারণত ৯৯ শতাংশ এবং ছিদ্র প্রায় ২ শতাংশ পর্যন্ত হয়। করোনা, সার্স এবং অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসগুলো থেকে বাঁচতে বিদেশে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। মাস্কটি কাশি এবং হাঁচির মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে দেবে না।

কাদের অবশ্যই মাস্ক পরা উচিত? আপনি যদি একজন মেডিক্যাল কর্মী হন, করোনায় আক্রান্ত হন, সংক্রমিত রোগীদের সংস্পর্শে থাকেন, ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের অঞ্চলে বসবাস করেন, সংক্রমিত ব্যক্তির যত্ন নিচ্ছেন, ফ্লুর মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয় তাইলেই কেবল মাস্ক পরা উচিত।

কখন পরবেন? যদি সুস্থ থাকেন তাহলে করোনা হয়েছে এমন কোনো সন্দেহভাজন রোগীর যত্ন নেওয়ার সময় আপনার মাস্ক পরা প্রয়োজন। যদি কাশি এবং সর্দি লেগে থাকে তবে মাস্ক পরুন। মাস্ক পরার পরেও আপনি খেয়াল রাখবেন যাতে আপনার হাত পরিষ্কার থাকে কারণ, মাস্ক খোলার সময় সংক্রমিত হাত নাকে, মুখে স্পর্শ হলে আপনার শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে। তাই, সময় সময় হাত ধুয়ে নিন।

মাস্ক পরার সময় সাবধানতা

মাস্ক পরার আগে অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান-পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন। মাস্ক দিয়ে আপনার মুখ এবং নাকটি ঢেকে রাখুন এবং খেয়াল রাখবেন যাতে কোনো ফাঁক না থাকে। মাস্ক পরার পরে হাত দিয়ে তা স্পর্শ করবেন না, যদি স্পর্শ করেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে হাত পরিষ্কার করুন। একবার ব্যবহার করার পর এই মাস্ক পুনরায় ব্যবহার করবেন না।

মাস্ককে কখনোই বাইরে থেকে হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না। পিছন থেকে মাস্কটি খুলুন এবং অবিলম্বে এটি ঢাকনাসহ ডাস্টবিনে ফেলে দিন। এরপর অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজার বা সাবান-পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *