Home » ৩ মাস লাগাতার গণধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা আদিবাসী কিশোরী

৩ মাস লাগাতার গণধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা আদিবাসী কিশোরী

অনলাইন ডেস্ক

: বন্ধুদের সঙ্গে একদিন ঘুরতে গিয়েছিল এক আদিবাসী কিশোরী। সেদিনই হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নেয় তার বন্ধুরা। এরপর সেই ফোন ফেরত দেওয়ার কথা বলে তাকে একাধিকবার ডেকে নেয় তারা। আর ফোন নিতে গিয়েই বারবার গণধর্ষণের শিকার হয় ১১ বছরের এই কিশোরী। বর্তমানে সে এক মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ঝাড়খণ্ডের খুন্তিতে।

ধর্ষিত কিশোরীর অভিযোগ, তিন মাস ধরে তাকে নিয়মিত গণধর্ষণ করা হয়েছে। তার দাবি, গত তিন মাসে ২৫ থেকে ৩০ বার তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। এক একবারে ১০ থেকে ১২ জন মিলে তাকে ধর্ষণ করেছে। এদিকে, আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ইতিমধ্যেই ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় পলাতক আরও ছয়জনের সন্ধানে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথোরিটির (ডিএলএসএ) কাছে অভিযোগ জানায় ওই আদিবাসী কিশোরী। তার পরেই গণধর্ষণের খবর প্রকাশ্যে আসে। কিশোরী জানায়, গানপয়েন্টে তাকে তিন মাস ধরে ১২ জন মিলে রেপ করে। গত একমাস ধরে তার পিরিয়ডও হচ্ছে না। ডিএলএসএ বিষয়টি দেখার জন্য জেলা শিশু কল্যাণ কমিটিকে নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ধর্ষিতার বয়ান রেকর্ড করা হয়।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই কমিটি খুন্তির পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগের কপি পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলে। তার ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের হয়। কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, গত বছর ধর্ষকদের একজন বজরংয়ের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়েছিল। বজরং আলাপ করায় সুরজের সঙ্গে। এই দুজনেরই বাড়ি খুন্তির বাগরু গ্রামে। তাদের সঙ্গে একদিন ঘুরতে বেরিয়েছিল ওই কিশোরী। রাস্তায় বেরিয়ে বুঝতে পারে দুজনই মদপান করেছে। হঠাৎ বজরং তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলে। দুজনে মদ্যপ অবস্থায় থাকায় কথা না বাড়িয়ে বাড়ি ফিরে আসে ওই কিশোরী।

পরে অন্য একটি ফোন থেকে কল করে তার ফোনটি ফেরত চাইলে, এসে নিয়ে যেতে বলে বজরং। ফোন নিতে গেলে তাকে নির্জন একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে সে। সে সময় তার কয়েকজন বন্ধুও কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এরপর তিন মাসে একাধিকবার ফোন ফেরত দেওয়ার কথা বলে, তাকে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে। ফোনও ফেরত দেয়নি। পুলিশের কাছে ওই কিশোরী জানায়, ধর্ষকদের কয়েকজনকে সে নামে চেনে। বাকিদের মুখ দেখলে চিনতে পারবে।

তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পারে, মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর কিশোরী মায়ের কাছেই থাকতো। কিন্তু, মা দ্বিতীয়বার বিয়ে করার পর তাকে আর সহ্য করতে পারতো না। শারীরিক নির্যাতন করতো। তাই সে দাদু-দিদার কাছে চলে এসেছিল। কিন্তু মা অপছন্দ করায় সেখানেও থাকতে পারেনি ওই কিশোরী। তাই এক রকম অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিল। ওই কিশোরীকে এখন সরকারি হোমে রাখা হয়েছে।

ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রে খবর, রোববার অভিযুক্তদের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম বজরং, রহিত, মণীশ, সুরজ, প্রকাশ ও রাহুল। সোমবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হলে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।

জানতে চাইলে খুন্তির পুলিশ সুপার আশুতোষ শেখর জানান, বাকি ছয় অভিযুক্তকেও শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। খুব শিগগির তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।

ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা ছাড়াও ধর্ষিতা নাবালিকা হওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *