অনলাইন ডেস্ক
: দাঙ্গা সহিংসতার পর ভারতের রাজধানী দিল্লির বিভিন্ন স্থানে এখন একেবারে থমথমে বিরাজ করছে। দিল্লির উত্তর-পূর্বের যেসব শহরে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে সেখানকার লোকজন এখনও চাপা উত্তেজনা আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী (সিএএ) আইনকে কেন্দ্র করে গত রোববার থেকে দিল্লির উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে এখন পর্যন্ত ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছে। অপরদিকে আহত হয়েছে আরও তিন শতাধিক মানুষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এর আগে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। শুক্রবার থেকে এসব বিধি-নিষেধ কমে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত কয়েকদিনের সহিংসতা নিয়ে কোনো ধরনের বক্তব্য না দেয়ায় বেশ সমালোচনা হচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সহিংসতা শুরুর পর চুপই ছিলেন। সহিংসতার তিনদিন পর তিনি সবাইকে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারি এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, গত ৩৬ ঘণ্টায় বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। সহিংসতার ঘটনা তদন্তে দু’টি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। এদিকে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা দিয়েছেন যে, সহিংসতার ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। নিহত বয়স্ক পরিবারকে ১০ লাখ ও নিহত নাবালক পরিবারকে ৫ লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিল্লির ক্ষমতাসীন দল আম আদমি পার্টি তাদের দলের এক নেতাকে বহিষ্কার করেছে। তাহির হুসেইন নামের ওই নেতার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা কর্মকর্তা অঙ্কিত শর্মাকে খুনের অভিযোগ উঠেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করে মোদি সরকার। তারপর থেকেই এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাসের পর থেকেই মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। সমালোচকদের দাবি, এই আইন ভারতের সংবিধানবিরোধী। এই আইনের কারণে মুসলিমরা আতঙ্কে আছেন যে, মোদির ভারতে তাদের হয়তো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হবে।
গত শনিবার জাফরাবাদে সিএএ-বিরোধীরা রাস্তা অবরোধ করে। রোববার থেকে পাল্টা সিএএর পক্ষে সমাবেশ শুরু হয়। এরপরেই দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ শুরু হয়। আর এই বিক্ষোভই সংঘাতে রূপ নেয় এবং দিল্লি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন স্থানে বেছে বেছে মুসলিমদের ঘর-বাড়ি এবং দোকানপাটে হামলা চালানো হয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে কমপক্ষে তিনটি মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে। কিছু স্থানে পুলিশকে দুর্বৃত্তদের সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। এছাড়া অশোক নগরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, একটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ইমাম এবং মসজিদের এক রক্ষীকে মারধর করেছে পুলিশ। পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সূত্র: জাগো নিউজ
প্রতিনিধি