তাঁর গানের প্রশংসা এখন সর্বত্র। বহুদিন পর তাঁর গান শোনার সুযোগ পেল কলকাতাবাসী। সাহানা বাজপেয়ী এখন পড়াশোনা ও কাজের সূত্রে প্রবাসী। অনেক দিন পর তাঁকে কাছে পেয়ে আল্পুত সবাই। বুধবার রোটারি সদনে প্রয়াত সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক সাহিত্য সমাবেশে গান গেয়ে শোনান সাহানা বাজপেয়ী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ, দেবেশ রায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, পবিত্র সরকার, সুমিতা চক্রবর্তী, ভগীরথ মিশ্র প্রমুখ।
শুরুতে দুটি রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে শোনান সাহানা। তাঁর দরাজ কণ্ঠে উঠে আসে ‘আমি বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই’। ইউটিউবের সৌজন্যে তাঁর গাওয়া এই গান ইতিমধ্যেই বহু মানুষের মন ছুঁয়েছে। সাহানা বাজপেয়ী বলেন, “এখানে গান গাইতে এসে খুব ভাল লাগছে। অনেক বিদগ্ধ মানুষ এখানে আছেন। তাঁদের পাশে বসে আমি সন্ত্রস্ত হয়ে আছি। আমি শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেছি ছোটবেলা থেকে। স্টেজে বসে গাইতে খুব একা লাগে। সকলে যদি গলা মেলান তাহলে খুব ভাল লাগবে।” এরপর ‘তোমায় গান শোনাব’ গানটি গেয়ে শোনান সাহানা।
অনুষ্ঠানে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ পুরস্কার অর্পণ করা হয় সাহিত্যিক সাধন চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর হাতে পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ১০,০০০ টাকা তুলে দেন শঙ্খ ঘোষ। সাহানা বাজপেয়ীর গান শুনতে জমায়েত হয়েছিলেন বহু কম বয়সী শ্রোতা। দেবেশ রায় এবং শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তাঁদের বক্তব্যে সাহানার গানের তারিফ করেন।
দেবেশ রায় বলেন, “সাহানার বাবা আমার বন্ধু ছিলেন। রাষ্টবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিমল বাজপেয়ী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ছিলেন। আমি ওই ইউনিভার্সিটির একজিকিউটিভ কাউনসিলে দশ বছর ছিলাম। তখন আমাদের গভীর বন্ধুত্ব এবং বন্ধুত্বের সঙ্গে ঝগড়াও হত। আমরা একটা টিমের মতো কাজ করতাম। কি সুন্দর গান গাইল সাহানা।” শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “দেবেশ রায়ের বন্ধুর কন্যা সাহানা। আমি উইটিউবে তাঁর গান শুনেছি বারবার। খুব মিষ্টি গলা। এত ভাল গান গায় যে আমি বিস্মিত হয়ে শুনি। তাঁকে আজ সামনে থেকে দেখে, গান শুনে আমার মনটা খুব ভাল হয়ে গেল।”
অনুষ্ঠানের শেষে আরও দুটি গান শোনান সাহানা। তাঁর কণ্ঠে উঠে আসে লালন ফকিরের ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি’। তিনি জানান, এটা তাঁর মায়ের প্রিয় গান। গত অক্টোবরে মায়ের চলে যাওয়ার কথা মনে করে মঞ্চে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। এরপর গেয়ে শোনান শাহ আবদুল করিমের ‘আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবি মন বান্ধিবি কেমনে?’। তখন রোটারি সদন উপচে-পড়া শ্রোতা মেতে ওঠেন সাহানা বাজপেয়ীর গানে। সমবেত শ্রোতার পক্ষ থেকে একের পর এক গানের অনুরোধ এলেও নির্দিষ্ট সময় অনুষ্ঠান শেষ করতে বাধ্য হন উদ্যোক্তারা।
নির্বাহী সম্পাদক