হাতে মাত্র ২৩৩ রানের পুঁজি! টেস্ট ক্রিকেটের বিবেচনায় অনেক কমই। এমন পুঁজি নিয়ে ফিল্ডিং করতে নেমে যদি সহজ ভুল হয় তাহলে যেকোনো দলকেই মাশুল দিতে হবে। বাংলাদেশকেও তাই দিতে হচ্ছে। মাত্র দুই রানের মাথায় ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান বাবর আজম, সেই সহজ ক্যাচ সহজেই ফেলে দিয়েছেন এবাদত হোসেন!
সেই বাবর এখন হাফসেঞ্চুরি (৬৮) করে ফেলেছেন। ওপেনার শান মাহমুদের সঙ্গে শত রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যাচ্ছেন বড় সংগ্রহের দিকে। শান মাহমদু সেঞ্চুরি করে সাজঘরে ফেরেন। পাকিস্তানের সংগ্রহ ৫৪ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান। ক্রিজে আছেন শান মাহমুদ ও য়াসাদ শফিক।
দিনের শুরুতে দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু উইকেটের দেখা পাচ্ছেন না অন্য দুই পেসার এবাদত হোসেন ও রুবেল হোসেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই পাকিস্তানি ওপেনার আবিদ আলীকে ০ রানে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান রাহী। পাকিস্তানকে চেপে ধরতে হলে দ্রুত উইকেট তোলার কোনো বিকল্প নেই টাইগার বোলারদের। এরপর অধিনায়ক আজহার আলীকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে ৯১ রান যোগ করে উলটো টাইগারদের চেপে ধরে ওপেনার শান মাহমুদ। আজহার আলীকে সাজঘরে পাঠিয়ে এই জুটি ভেঙে দেন রাহী।
রাহী দুই উইকেট তুলে নিলেও উইকেটের দেখা পাচ্ছেন না এবাদত হোসেন ও রুবেল হোসেন। এবাদত এখন পর্যন্ত ১১ ওভার করে দিয়েছেন ৬৫ রান, আর রুবেল ৯ ওভারে ৪৬ রান। রাহী একাই ১৩ ওভারে মাত্র ৩৫ রান দিয়ে নেন দুই উইকেট। স্পিনার তাইজুল কৃপণ বোলিং করলেও উইকেটের দেখা পাচ্ছেন না। ১৮ ওভার বল করে তিনি মাত্র ৪৬ রান দিয়েছেন।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস
গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হয় এই টেস্ট। টপ অর্ডার-মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলেও আট নম্বরে নেমে পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। দলীয় ১৬১ রানের মাথায় লিটন যখন সাজঘরে ফেরেন তখন ২০০ করতে পারবে কি-না এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু তাইজুল কোনো প্রশ্ন রাখারই সুযোগ দেননি। আগেই ক্রিজে থাকা মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গ দিয়ে ২০০ পার হওয়ার পেছনে অনেক ভূমিকা রাখেন। দুজনের সপ্তম উইকেটের জুটিতে ৫৩ রানের সুবাদে সবকটি উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রান করে বাংলাদেশ। সাত ওভার আগে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হলেও প্রথম দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়ার।
দলীয় ২১৪ রানে ব্যক্তিগত ২৪ রানে তাইজুল ফিরে গেলেই মূলত সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। তবে মিঠুন থাকায় কিছুটা আশা বেঁচে ছিল। সর্বোচ্চ ৬৩ রান আসে মিঠুনের ব্যাট থেকে। ১৪৬ বলে তিনি এই রান করেন। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম দুই ওভারেই বাংলাদেশ হারায় দুই ওপেনারকে। ক্রিজে থিতু হয়ে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল হক (৩০)। আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তও (৪৪) সম্ভাবনা দেখিয়ে ফেরেন সাজঘরে। শান্ত-মুমিনুলদের মতো একই পথের পথিক মাহমুদউল্লাহও। ৪৮ বলে ২৫ রান করে ক্রিজে থিতু হয়ে ফেরেন সাজঘরে। একই কাজ করেছেন লিটন দাসও। ৪৬ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন সাজঘরে।
মুমিনুলের সঙ্গে ৫৯ রানের জুটির পর এখন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৩৩ রানের জুটে গড়ে শান্ত ফেরেন ৪৪ রান করেই। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন শাহেন শাহ আফ্রিদি। দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ আব্বাস ও হারিস সোহাইল।

প্রতিনিধি