Home » সিলেট-১ নির্বাচনের মাঠে ড. মোমেন

সিলেট-১ নির্বাচনের মাঠে ড. মোমেন

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোরডটকম

: আলোকিত সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে যাকে অভিহিত করেন শুভাকাঙ্খিরা- তিনি অর্থমন্ত্রী ও মর্যাদার আসনখ্যাত সিলেট-১ আসনের সাংসদ আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাঁরই সুযোগ্য সহোদর মোমেন। পুরোনাম আবুল কালাম আবদুল মোমেন। ড. একেএ মোমেন নামেই তিনি পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে বিদেশের মাটিতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পার করেছেন তিনি। কয়েকবছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উড়ে এসেছেন দেশে। পুরোদস্তুর কাজ করছেন রাজনীতির মাঠে। অতীতে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না থাকলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মকান্ডে তাঁর সরব উপস্থিতিই জানান দিচ্ছে ।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের চলমান উন্নয়ন কাজগুলো তদারকির পাশাপাশি মোমেন দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন সিলেট-১ আসনের পাড়া-মহল্লা। যোগ দিচ্ছেন নগরী, শহরতলির বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে। রাজধানী ঢাকাতে ও তাঁর যোগাযোগ কোন অংশে কম নয়। পত্র-পত্রিকার জন্মদিনের অনুষ্ঠান, টিভি চ্যানেলগুলোর টকশোতে ও সুবক্তা হিসেবে নজর কেড়েছেন সাবেক এই কূটনীতিক।

অতিসম্প্রতি সিলেট নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ আয়োজিত উঠান বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন ড. আবুল কালাম মোমেন। এসব অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্য নির্বাচনমুখী। তিনি তুলে ধরছেন সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড। তাঁর মন্তব্য- ‘দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে লাখো শহীদের রক্তে পাওয়া স্বদেশ। আর সেই মাথা সমুন্নত রাখতে আবারো আপামর মানুষকে নৌকার সহযাত্রী হতে হবে। ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সংসদ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দেশকে বঙ্গবন্ধু জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানে সোনার বাংলায় পরিণত করার কাজ তরান্বিত করতে হবে।’

অর্থমন্ত্রীর দেখানো আলোকিত সিলেট বাস্তবায়নে বেশ কিছুদিন আগে মোমেন বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন মহাপরিকল্পনা। যার কিছু কিছু কাজ ইতোমধ্যে আলোর মুখ দেখা শুরু করেছে। এছাড়া শহতরলির ইউনিয়নগুলোতে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে এবং নৌকা প্রতীকের সমর্থনে প্রচারণা চালাবেন ড. মোমেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণের লক্ষ্যেই নিজেকে প্রস্তুত করছেন তিনি। সিলেটের মানুষ তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন মানুষ তাঁকে উৎসাহ যোগাচ্ছেন।’

এদিকে নির্বাচনের ব্যাপারে ড. আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি তাঁর ভাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি অংশ গ্রহণ না করেন আর প্রধানমন্ত্রী যদি তাকে পছন্দ করেন তবে নির্বাচনের ব্যাপারে তার কোন আপত্তি নেই। তিনি সে লক্ষ্যেই মানুষের সুখ দুঃখের কথা জানতে তৃণমূলে কাজ করে যাচ্ছেন।

এর আগে জাতিসংঘে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে দীর্ঘ কর্মজীবন শেষ করে দেশে ফিরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন ড. আবদুল মোমেন। তখন তাঁকে নিয়ে সিলেটের রাজনীতিতে শুরু হয় নানামুখি জল্পনা-কল্পনা। গুঞ্জন ওঠে বয়সের ভারে ন্যুজ্ব অর্থমন্ত্রীর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ড. মোমেন।

সিলেট আওয়ামী পরিবারের রাজনীতিতেও যুক্ত হচ্ছেন মোমেন এমন গুঞ্জনও কম হয়নি। সিলেটে সরাসরি যুক্ত না হলেও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্যপদ পূরণের মাধ্যমে মোমেন সরাসরি নাম লেখান আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন নামের নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয় মোমেনের নেতৃত্বে। তিনি বর্তমানে সেটির চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন।

ক্লিন ইমেজের এই ব্যক্তি কর্মজীবনে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় বিদেশের কর্মজীবন ছেড়ে ড. আবদুল মোমেন দেশে চলে আসেন। আওয়ামীলীগের দলীয় সূত্র মোমেনের দেশে ফেরার ব্যাপারে সে সময় জানিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী আবদুল মোমেনকে দেশে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করতে যাচ্ছেন। সেজন্যই মোমেনের দেশে প্রত্যাবর্তন।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর আবদুল মোমেন ঢাকা থেকে সিলেট আসার পর তাকে যে সংবর্ধনা দিয়েছেন আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাতে ড. মোমেনের সিলেটের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি বেশ পরিষ্কার হয়ে ধরা দেয়।
সিলেট ফিরেই পরের রাতে ড. মোমেন সিলেট আওয়ামী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। সেদিন তাঁর মন্তব্য ছিল- ‘প্রায় ৩৭ বছর প্রবাসে থেকে বাংলাদেশের একজন মানুষ হিসাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। সর্বশেষ জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনের প্রতিনিধি তথা রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন শেষে প্রধানমন্ত্রীর আহবানে দেশে এসেছি। এখন থেকে সুখ-দুখে আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’

দেশ ও জনগণের কল্যাণে চলমান অভিযাত্রায় সিলেটবাসীর সাথে এককাতারে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন- সেদিন তিনি।
ড. মোমেন দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন। সিলেটবাসীর কাছে তাঁর বেশ সুনাম রয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোটভাই হওয়ার সুবাদে সহজেই তিনি সিলেট আওয়ামী লীগের কাছেও অর্জন করে নিয়েছেন গ্রহণযোগ্যতা। তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকাল নগরীর মাছিমপুরের আবুল মাল আবদুল মুহিত কমপ্লেক্সে ড. আবদুল মোমেনকে বিশাল সংবর্ধনা প্রদান করেন সিলেট আওয়ামী পরিবার।

ঢাকা থেকে একটি বেসরকারি হেলিকপ্টারযোগে তিনি ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর হেলিকপ্টার  যোগে সিলেট আসেন। মাছিমপুরের আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে অবতরণ করেন। ৬ বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন হয়ে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। নিজ জন্মভূমে পৌঁছে তিনি প্রথমে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহ্পরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। পরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

 

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *