জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতকে স্ত্রী বিদেশ থেকে টাকা না দেওয়ায় ১১ বছরের শ্যালককে কুপিয়ে আহত করেছেন দুলাভাই। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের বরাটুকা মেওয়ারতৈল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের বরাটুকা মেওয়ারতৈল গ্রামের খালিক মিয়ার পুত্র শিপন মিয়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কৌশলে জাহিদপুর বাজার থেকে সিএনজি যোগে শিশু শ্যালক আমির উদ্দিনকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। রাতভর তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।
শুক্রবার ভোরে পাশের বাড়ির মাসুক লন্ডনীর একটি সেফটিক ট্যাংকের ভেতরে নিয়ে হাত বেঁধে ফেলে চাপাতি দিয়ে কুপাতে থাকে দুলাভাই। চাপাতির কোপে শিশু আমিরের মুখের ডানে ও মাথার পেছনের অংশ ক্ষত-বিক্ষত হয়। এক পর্যায়ে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসার আগে মৃত ভেবে সেফটিক ট্যাংকের মুখ বন্ধ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে শিপন।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে সকালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জানা গেছে, দিনমজুর সমুজ আলী দীর্ঘ ২০ বছর ধরে পরিবারকে নিয়ে ছাতকে দোলারবাজার ইউনিয়নের জাহিদপুর গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে বসবাস করে আসছে। তাদের মুল বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও এলাকায়।
প্রায় ৮বছর আগে পরিবার-পরিজনকে জাহিদপুর বুরাইয়া বাড়ির মরহুম সিরাজ মিয়ার বাড়িতে আসে। এখানে বসবাসের সুযোগে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানরা বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। তার তিন পুত্র ও তিন কন্যার মধ্যে সবার ছোট আমির উদ্দিন।
প্রায় দুই বছর আগে স্বামী শিপনের অভাবের সংসারে হাল ধরতে এক মাত্র কন্যা সন্তানকে রেখে সৌদি আরবে চলে যায় হালিমা। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। প্রায় ২ মাস ধরে হালিমা তার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে না এবং টাকা পয়সা দিচ্ছে না। স্ত্রীর ওপর প্রতিশোধ নিতে না পারায় শিপন তার শ্যালককে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা চালায়।
এ ব্যাপারে জাহিদপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বেলাল বলেন, শিশুটি জাহিদপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে কাজ করতো। থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এএসপি সার্কেল বিল্লাল হোসেন জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন, অভিযোগ দিলে মামলা হবে।
প্রতিনিধি