জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এক কিশোরী মাত্র ১৩ বছর বয়সে তার তার কোলজুড়ে এসেছে এক কন্যা সন্তান। তিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। এই বয়সেই ধর্ষিতা হয়ে মা হলেও বাবা হয়নি কেউ।গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই কিশোরীর এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে।
বর্তমানে কিন্তু মা-মে দুইজনে সুস্থ এবং নিজ বাড়িতেই আছেন। কিন্তু দিশেহারা তাদের পুরো পরিবার। সামাজিকভাবে আছে তাদের প্রতি হেও-প্রতিপন্নতা। এমনকি কন্যা সন্তানের জন্মের পর সামাজিক আচার অনুষ্ঠান নিয়েও আছেন দুশ্চিন্তায়। কিশোরীর পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং তাদের আশপাশে প্রতিটি ঘরই ধর্ষক বাপ্পা সেনের আত্মীয় হওয়ায় কিশোরীর পরিবারের প্রতি আছে হুমকি।
টাকা দিয়ে কারাগার থেকে বাপ্পাকে বের করে আনা হবে এমন দম্ভও আছে বাপ্পার স্বজনদের পক্ষ থেকে। এমন যখন অবস্থা তখন কিশোরীর পরিবারের কেবল শিশুর স্বীকৃতিটাই দাবি। গত ৪ মার্চ ওই কিশোরীকে বেড়ানোর কথা বলে ছাতক থানার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় আব্দুস সামাদ আজাদ নামের এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে যান জগন্নাথপুর এলাকার বাসিন্দা বাপ্পা সেন।
পরে সেখানে তারা দুইজন মিলে ধর্ষণ করেন কিশোরীকে। ধর্ষক বাপ্পা সেন জগন্নাথপুর উপজেলার খাসিলা এলাকার মৃত মলয় সেনের পুত্র ও সৈয়দপুর পাবলিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। আর তার বন্ধু আব্দুস সামাদ আজাদ ছাতক থানার গোবিন্দগঞ্জ এলাকার তকিপুর গ্রামের আব্দুশ শহীদের পুত্র। তিনি ছিলেন স্থানীয় আয়াজুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
একপর্যায়ে ওই কিশোরী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে সে তার পরিবারকে ধর্ষণের বিষয়টি জানালে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় বাপ্পা সেন (২৬) ও আব্দুস সামাদ আজাদকে (২৬) প্রধান আসামী করা হয়।
এ মামলায় বাপ্পা সেন ও ধর্ষণ কাজে সহযোগিতা করার অপরাধে তাদেরকে বহনকারী সিএনজি অটোরিকশা চালক কয়সর (৩২) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুইজনের মধ্যে বাপ্পা সেন এখনো কারাগারে আছেন আর কয়সর আছে জামিনে।
অপরদিকে আব্দুস সামাদ আজাদ ঘটনার পর থেকে পলাতক বলে জানিয়েছেন জগন্নাথপুর থানার ওসি (তদন্ত) নব গোপাল দাশ। ওসি তদন্ত বলেন, বাপ্পা সেন, আব্দুস সামাদ আজাদ ও সিএনজি চালক কয়ছরকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট পাঠানো হয়েছে। এখন মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। তবে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পর আবদুস সামাদ আজাদ ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রতিনিধি