অনলাইন ডেস্ক ঃ ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে আবারো বড় ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। মঙ্গলবার দিল্লির রাজপথগুলো রীতিমতো রণক্ষেত্র হয়ে উঠে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। এর মধ্যে সিলামপুর এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সব থেকে বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় পুলিশ পিকেটে। পুলিশকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইট নিক্ষেপ করতে থাকে আন্দোলনকারীরা। এতে আহত হন পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য। ইট বৃষ্টি থামাতে পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এর জেরে বন্ধ হয়ে গেছে কমপক্ষে সাতটি মেট্রো স্টেশন।
সাময়িক বন্ধ ছিল রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সড়ক।গত কয়েক দিন ধরেই নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তপ্ত ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য। এর নেতৃত্বে রয়েছে প্রধানত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার প্রথম এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম দু’দিন ছোট পরিসরে আন্দোলন হলেও রোববার এতে যোগ দিতে শুরু করে সাধারণ মানুষও। এতে বাধা দেয় আইনরক্ষাকারী বাহিনী।
ফলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নয়াদিল্লির একাংশ। বিক্ষুব্ধরা রাস্তা অবরোধসহ বেশ কয়েকটি বাসেও আগুন ধরিয়ে দেয় এদিন। ওই দিন রাতে দিল্লি পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ছাত্রদের ওপর হামলা করে। ফলে বিষয়টি দেশব্যাপী প্রধান আলোচনায় পরিণত হয়। প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে গোটা দেশের ছাত্রসমাজ। নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয় আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় ও পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে মোদি বিরোধীরাও।
সোমবারও দিল্লিজুড়ে আন্দোলন অব্যাহত থাকে। তবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে অন্তত ২ হাজার মানুষ আবারো জড়ো হয় সিলামপুর এলাকায়। জামিয়ার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানাতে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। এসময় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট মারা হয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। পুলিশ টিয়ার শেল মেরে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে উল্টো মারমুখী হয়ে ওঠে উত্তেজিত জনতা। আগুন ধরিয়ে দেয় পুলিশ পিকেটে।
পুলিশও লাঠিচার্জ চালিয়ে যায়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। অবস্থা বেগতিক দেখে দিল্লির অন্তত সাতটি মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেয় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। বন্ধ হয়ে যায় দিল্লির প্রধান কয়েকটি সড়কও।এদিকে দেশজুড়ে এই উত্তাল অবস্থার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ঝাড়খণ্ডের বারহাইতে ভোটপ্রচারে গিয়ে মঙ্গলবার কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে মোদি বলেন, সাহস থাকলে খোলাখুলি ঘোষণা করুন, পাকিস্তানের সব অনুপ্রবেশকারীকে নাগরিকত্ব দিতে তৈরি আমরা। কংগ্রেস মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেন তিনি। আশ্বাস দেন, নতুন এই নাগরিকত্ব আইন ভারতের নাগরিকদের জন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না।
প্রতিনিধি