হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ের পল্লীতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে কামাল মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে হাওরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। পরে দুই নারী লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত কামাল মিয়া উপজেলার হরিপুর গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়- উপজেলার হরিপুর গ্রামের বজলু মিয়ার ছেলে ফজল মিয়ার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল একই গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে সালমান মিয়ার। গত ৬ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে সালমান মিয়ার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে ফজল মিয়ার বুকে আঘাত করেন। গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় গত ১০ নভেম্বর নিহত ফজল মিয়ার বাবা বজলু মিয়া বাদি হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে বানিয়াচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সালমান মিয়াসহ দুইজন এখনও জেলে রয়েছেন। বাকিরা হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন।
এদিকে সোমবার ফজল মিয়া হত্যা মামলার ১২ নাম্বার আসামী ওই গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে কামাল মিয়ার ক্ষত-বিক্ষত লাশ নিয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে আসেন দুই নারী। একজন নিহত কামল মিয়ার মা ও অপরজন খালা বলে দাবি করেন।
এ সময় তারা জানান- সোমবার কামাল মিয়াসহ তিনজন গুঙ্গিয়ারজুরি হাওয়ে একটি খাল সেচে মাছ ধরতে যান। এ সময় কয়েকজন লোক দেশিয় অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই কামাল মিয়া নিহত হন। তবে সাথে থাকা দুইজন পালিয়ে যান। এ সময় হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের বাঁধা প্রদান করেন। বিষয়টি সন্ধেহজনক হওয়ায় সাংবাদিকরা একাধিক প্রশ্ন করলে খালা পরিচয়ধারী নারী উত্তেজিত হয়ে উঠেন।
কিছুক্ষণ পর সদর হাসপাতালে যান সহকারি পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ সেলিম। এ সময় কৌশলে ওই দুই নারী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সারা হাসপাতাল খোঁজেও কাওকে পাননি পুলিশ সুপার।
পরিচয় গোপন করার শর্তে একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানিয়েছে- নিহত কামাল মিয়া সহজ-সরল প্রকৃতির ছিল। ফজল মিয়াকে প্রকাশে খুন করার পর ফুল মিয়া গংরা বে-কায়দায় পরে যান। মূলত ওই খুন ঢাকার জন্য এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য নিজেরাই কামাল মিয়াকে খুন করেছেন।
এ ব্যাপারে সহকারি পুলিশ সুপার (বনিয়াচং সার্কেল) শেখ সেলিম সোমবার রাত ১০টায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে বলেন- ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। হাসপাতালে নিহতের স্বজনদের কাওকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মামলা করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রতিনিধি