সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে গেল কিছুদিন ধরে ছিল টান টান উত্তেজনা। কে হচ্ছেন সভাপতি, কে পাবেন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব-এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল নানামুখী কানাঘুষা। সেই কানাঘুষা থেমেছে, এসেছে চমক!
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে চমক দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এসেছে বড় চমক।
আজ বৃহস্পতিবার জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীর চৌহাট্টাস্থ আলিয়া মাদরাসা মাঠে এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শেষ বিকেলে নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেন। সমঝোতার ভিত্তিতে এ নাম ঘোষণা করা হয়।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগে এডভোকেট লুৎফুর রহমান সভাপতি, এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। অন্যদিকে মহানগর আওয়ামী লীগে মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন সভাপতি এবং অধ্যাপক জাকির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
জানা গেছে, লুৎফুর রহমান আগে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। ২০১৫ সালে তৎকালীন সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান মারা যাওয়ার পর লুৎফুর ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পান। এ দায়িত্বে থেকে তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগের অনেকের ধারণা ছিল, বয়সের বিষয়টি বিবেচনা করে লুৎফুরকে এবার সভাপতি পদে নাও রাখা হতে। এছাড়া সভাপতি পদে আগের কমিটির সহসভাপতি ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে জোর গুঞ্জন ছিল। আলোচনায় ছিলেন আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে ঘিরেও। তবে শেষপর্যন্ত লুৎফুরের কাঁধেই ওঠেছে জেলার গুরুদায়িত্ব।
এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জেলা আওয়ামী লীগের আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এবার তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন আগের কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক ও এডভোকেট নিজাম উদ্দিন। তবে সবাইকে পেছনে ফেলে নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে যান নাসির।
এদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগে দুই শীর্ষ পদেই এসেছে বড় চমক। আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ মহানগরের সভাপতি পদে ছিলেন তুমুল আলোচনায়। আর আগের কমিটির সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানও চেয়েছিলেন একই পদে থাকতে। কিন্তু নেতাকর্মীদের চমকে দিয়ে এ শাখায় সভাপতি করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদকে।
কিন্তু মাসুক উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলার রাজনীতিতে জড়িত। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। এবার তিনি জেলা শাখায় সভাপতি হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহানগরে।
এদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনার অগ্রভাগে ছিলেন আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল এবং শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। তবে এ শাখায় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে অধ্যাপক জাকির হোসেনকে। অবশ্য তিনি নিজেও সাধারণ সম্পাদক হতে চেয়েছিলেন।
অধ্যাপক জাকির হোসেন মহানগর আওয়ামী লীগের আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এদিকে,
সিলেট আওয়ামী লীগে পুরনো কমিটির নেতারাই নতুন করে দায়িত্ব পেতে পারেন, এমন
আলোচনাও চলছিল দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু আগের কমিটির শীর্ষ চার
নেতার মধ্যে মাত্র একজন, লুৎফুর রহমানই শুধু নতুন কমিটিতে টিকে গেছেন।
বাকিদের কারোরই জায়গা হয়নি নতুন কমিটির শীর্ষ দুটি পদে।
প্রতিনিধি