Home » নুসরাতের বাড়িতেও অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার

নুসরাতের বাড়িতেও অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার

ফেনী প্রতিনিধি,অনলাইন সংস্করণ: ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় ঘিরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ বিভাগ। আদালত চত্বর, ফেনী সদর, সোনাগাজী  উপজেলা এবং নুসরাতের বাড়িতে এই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার মো. নুরুন্নবী সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে সরকারি গাড়ি ছাড়া কোনো যানবাহন ঢুকতে পারবে না। আমরা সেখানে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছি।ফেনী সদর ও সোনাগাজীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তা চৌকিও বসানো হয়েছে। এছাড়া র‌্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।রায় ঘোষণাকে ঘিরে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে সোনাগাজীতে নুসরাতের বাড়িতে আগের চেয়ে আরও বেশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

সরেজমিনে দেখা যায়, নুসরাতদের বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত লোকজন রেজিস্টার খাতায় সই করে ওই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন। গত এপ্রিল থেকেই তিনজন পুলিশ সদস্য ওই বাড়ি পাহারা দিয়ে আসছিলেন। বুধবার সকাল থেকে আরও ৯ জন সদস্য বাড়ানো হয়।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তাঁর মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। গত ২৮ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। আর মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে পিবিআইয়ের লাগে ৩৩ কার্যদিবস।

এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ১৬ আসামি হলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল কাদের, প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার ছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ যোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন, আবদুর রহিম শরিফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মোহাম্মদ শামীম ও মহি উদ্দিন শাকিল।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *