বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) ১৩ দফা দাবি সম্বলিত একটি চিঠি পাঠিয়েছে দেশের ক্রিকেটাররা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খানের মাধ্যমে এ চিঠি পাঠানো হয়। আজ বুধবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন আইনজীবী নিজেই।রাজধানীর গুলশানে সিক্স সিজনস রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় দফা সংবাদ সম্মেলন করছেন সাকিব-তামিমরা। সেখানে ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হিসেবে ১৩ দফা পড়ে শোনাচ্ছেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান। দফাগুলোর বিস্তারিতও সাংবাদিকদের জানাচ্ছেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান সম্মেলনে তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘বাংলাদেশের পেশাদার ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। আজ বিকেল ৪টার সময় চিঠি পাঠিয়েছি বিসিবিকে।’ তবে ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবেন তিনি। কিন্তু আইনি সহায়তার জন্য কাজ করবেন না এই আইনজীবী। আমাদের সময় অনলাইনের জন্য ক্রিকেটারদের ১৩ দফা দাবি তুলে ধরা হলো:
এক. ক্রিকেটারস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) দায়িত্বে যারা আছেন তাদের সরাসরি পদত্যাগ করতে হবে। সংগঠনটির স্বাধীনতার জন্য এমন সিদ্ধান্ত মানতে হবে।
দুই. প্রফেশনাল ক্রিকেটারস অ্যাসোসিয়েশন থাকবে যার একটা প্রসেস থাকবে যেখানে শুধু খেলোয়াররা থাকতে পারবে। ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম এই ধরনের ক্রিকেট সংগঠন গড়ে ওঠে যেটা ক্রিকেটারদের স্বার্থ দেখবে। আমাদের দেশেরও সেরকম প্রতিষ্ঠান দরকার।
তিন. ঢাকার যত লিগ আছে তা পুর্বের নিয়মে চলতে হবে। প্লেয়ার্স বাই চয়েস নিয়মে ফেরত যেতে হবে। ক্রিকেটাররা এমনভাবে খেলতে আগ্রহী। বিপিএলও একইভাবে চলতে হবে। আগের মত চলতে হবে। বিপিএলে দেশী বিদেশীদের মধ্যে মুল্যের তারতম্য রাখা যাবে না। চার. প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ফি কমপক্ষে এক লাখ টাকা থাকতে হবে।
পাঁচ. সারা বছর কোচ, ফিজিও নিয়োগ রাখতে হবে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। ছয়. ন্যাশনাল টিমের কন্ট্রাকটেড প্লেয়ারদের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০ জন হতে হবে। সাত. লোকাল স্টাফ, কোচ, গ্রাউন্ডসম্যানদের বেতন অন্য টেস্ট খেলুড়ে দেশের মত সমমানের হতে হবে। আট. অতিরিক্ত দেশিয়দের জন্য টি টোয়েন্টি লিগের আয়োজন করতে হবে। নয়. বছরজুড়ে ক্রিকেট সূচি থাকতে হবে এবং সেটা একইরকমভাবে থাকতে হবে। কোনরকম ভঙ্গ করা যাবে না।
দশ. প্লেয়ারদের সব পাওনা সময়মতো পরিশোধ করতে হবে। এবং সিজনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এগার. দুটির বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে দিতে হবে। কোন রেষ্ট্রিকশন রাখা যাবে না। জাতীয় পর্যায়ের খেলা ছাড়া কোনো সময় নিষেধ করা যাবে না।
বার. বিসিবির যে রেভিনিউ থাকবে তার একটা অংশ ক্রিকেটারদের দিতে হবে। ভারতের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে কমার্শিয়াল হতে হবে। তের. বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও একইরকম সুবিধা প্রদান করতে হবে ঠিক যেমনটা ছেলেরা সুবিধা পেয়ে থাকে।
এর আগে পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হবে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন জাতীয় দল, ঘরোয়া লিগ ও জাতীয় লিগের খেলোয়াড়রা। এদিকে ক্রিকেটারদের জন্য মিরপুর হোম অব ক্রিকেট শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অপেক্ষা করছেন বিসিবি কর্মকর্তারা। বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ধর্মঘট ডাকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে তারা বসতে রাজি আছেন। অপেক্ষা করছেন তারা।
বিকেল ৪টার দিকে বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস সাংবাদিকদের মাধ্যমে ক্রিকেটারদের বিসিবিতে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বিসিবি সভাপতি আছে, এখন আমরা আলাপ-আলোচনা করতে পারি। এটার জন্য অপেক্ষা করছি। সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। আমরা আগেও বলছি, আমাদের দুয়ার খোলা।’

প্রতিনিধি