সিলেট নগরীতে অটোরকিশা চালক নাঈম আহমদ (১৫) খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দুই বন্ধু রুকন ও পারভেজ শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এদের মধ্যে আবদুর রুকন নগরীর শাহীঈদগাহ হাজারীবাগের আবদুল মুমিনের ছেলে ও পারভেজ একই এলাকার আবদুল করিম পিয়ারের ছেলে। আদালত সুত্রে জানা যায়, শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে হত্যার কারণ ও কিভাবে হত্যা করেছে সেসব বিষয় স্বীকার করেছে।
সিলেট মহানগর হাকিম প্রথম আদালতে রুকন ও পারভেজ বলে, তারা গত ঈদের সময় কাপড় কিনতে পারেনি। এবার তারা পরিকল্পনা করে নাঈমের অটোরিকশাটি বিক্রি করে তারা এবার ঈদে নতুন কাপড় কিনবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তারা নাঈমেকে শাহী ঈদগাহ থেকে হাজারীবাগে রুকনের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নাঈমকে বাসায় ঢুকিয়ে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করে তারা। এরপর লাশটি বস্তায় ঢুকিয়ে তারা অটোরিকশায় করে লালটিলায় ফেলে আসে।
লাশ ফেলে রেখে তারা কুমারাপাড়া এলাকায় এসে অটোরিকশাটিও ফেলে রাখে এবং অটোরিকশার ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায়। এই ব্যাটারি তারা ৬৪০০ টাকায় বিক্রি করে দক্ষিণ সুরমার একটি দোকানে। সেই টাকা দিয়ে তারা দুজনে চারটি জিন্সের প্যান্ট, তিনটি শার্ট এবং একই রকমের দুটি গেঞ্জি কিনে নগরীর হকার মার্কেট থেকে। এরপর তারা মিস্টি কিনে সুনামগঞ্জে রুকনের শশুর বাড়িতে চলে যায়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এদিকে, রুকন ও পারভেজ দক্ষিণ সুরমার যে দোকানে ব্যাটারি বিক্রি করেছিল সেই দোকানের মালিকও শনিবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নাঈম নিখোঁজ হলে রাতে তার বাবা আব্বাস উদ্দিন বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে বিভিন্নভাবে তথ্য পেয়ে পুলিশ নাঈমের বন্ধু রুকন ও পারভেজকে আটক করে। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নাঈমের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত নাঈম নগরীর বালুচরের সোনাই মিয়ার কলোনির আব্বাস উদ্দিনের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বালুচর লালটিলার উপর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
প্রতিনিধি