কোরবানির ঈদ মানেই শুধু খাওয়া-দাওয়া আর আনন্দ উল্লাস। গরীব-ফকির-মিসকিন থেকে শুরু করে প্রায় সবার বাড়িতেই ভাল ভাল খাবারের আয়োজন করা হবে। ঈদে একে অপরকে দাওয়াত দিবেন আবার দাওয়াত খাবেন। তাই এই ঈদে খাবার নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন অনেকেই। এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে হজম শক্তি।
বেশি খাওয়ার কারণে অস্বস্তি হলে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-
১. যেকোন ধরনের হারবাল চা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ক্যামোমিল চা, গ্রিন টি হজমের জন্য দারুণ উপকারী।
২. খাওয়ার পর অস্বস্তি দূর করতে পুদিনা পাতার চা খেতে পারেন। এতে থাকা মেনথল গ্যাস, বদহজম, বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
৩. পেটের অস্বস্তি দূর করতে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার যোগ করে খেতে পারেন। এতে থাকা প্রবায়োটিক শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
৪. হলুদে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী উপাদান অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পেটে যে অস্বস্তি হয় সেই প্রবণতা দূর করে। হালকা গরম পানিতে এক চিমটি হলুদ আর লেবু মিশিয়ে খেলে পেটের অস্বস্তি দূর হয়।
৫. অতিরিক্ত খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করলেও পেটের অস্বস্তি দূর হবে।
এছাড়াও রয়েছে কিছু উপাদান, যা হজমশক্তি বাড়াতে খুবই কার্যকরী:
আদা
হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে আদা। এটা দেহের টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। আদায় রয়েছে ‘জিনজারোলস’যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং পরিপাকক্রিয়া দ্রুত করে। সকালে এক কাপ আদা চা এবং রান্নায় আদার ব্যবহার কিংবা কাঁচা আদা খাওয়া পরিপাকযন্ত্র সুস্থ রাখে।
দারুচিনি
দারুচিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাংগানিজ যা দেহের ফ্যাটি এসিড হজম করতে সাহায্য করে। এবং এটি আমাদের রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। রান্নায় দারুচিনি ব্যবহার আমাদের দেহের পরিপাকযন্ত্র এবং হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক কার্যকরী। তবে যাদের লিভারে গুরুতর সমস্যা আছে তাদের জন্য এটা অনেক সময় ক্ষতি ডেকে আনে।
বিটরুট
এতে রয়েছে বিটাসায়নিন, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। এছাড়া এতে আরও রয়েছে ভিটামিন বি৩, বি৬ এবং ভিটামিন সি, বিটা-ক্যারোটিন যা সবই পরিপাকযন্ত্র, লিভার এবং গলব্লাডারের সুরক্ষায় কাজ করে।
রসুন
দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে রসুনের জুড়ি মেলা ভার। রসুনের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান যেকোন ধরনের ঠাণ্ডা কাশি, ভাইরাল ইনফেকশন দূর করার সাথে সাথে আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও কাজ করে। রান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি কাঁচা রসুন দেহের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী।
ব্রকলি
এই সবজিটি খাওয়া দেহের জন্য অনেক ভালো। এটি আমাদের দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে এবং হজমে সাহায্য করে। স্যুপ, পাস্তা কিংবা সাধারণ সবজি রান্নায় ব্রকলি ব্যবহার করুন। দেহ সুস্থ থাকবে।
এলাচ
সাধারণত রান্নাতে ভালো গন্ধ হওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় এলাচ। কিন্তু হজমের জন্যও ব্যবহৃত হয় এলাচ। এলাচে ভোলাটাইল তেল থাকে। যা গ্যাস এবং বদ হজমের হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়া মুখে দুর্গন্ধ ছাড়লে এবং পেটের আলসার এড়িয়ে চলতে অবশ্যই খেতে পারেন এলাচ।
মৌরি
মৌরি সাধারণত মুখ শুদ্ধি হিসেবে কাজ করে। এটি মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করে। খালি পেটে মৌরি খেলে গ্যাসট্রিকের সমস্যা দূর করা যায়। এছাড়া হজম শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে মৌরি।
পান
পান হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়া হার্ট ভালো রাখে, গ্যাসের সমস্যা দূর করে, শরীরে খারাপ টক্সিনের পরিমাণ কমিয়ে লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে।
বার্তা বিভাগ প্রধান