যশোর জেলা ডিজিটাল করার পর এবার গোটা সিলেট বিভাগ ডিজিটালের আওতায় নিয়ে আসতে যাচ্ছেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার। ফলে কোন কর্মকর্তা ফাঁকি দিয়ে বলতে পারবেন না, তিনি অফিসে নেই। তাই ফাইল দেখতে পারেননি। কারণ ডিজিটালের কারণে ওই ফাইলগুলোও হয়ে যাচ্ছে ই-ফাইলিং। অর্থাৎ কর্মকর্তা গাড়ি, বাড়ি বা পথে-ঘাটে যেখানেই থাকুন না কেন, তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনেই দেখতে পারবেন ওই ফাইল। এতে সরকারি অফিসগুলোর কাজের অগ্রগতি বাড়ার পাশাপাশি জনগণও দ্রুত সময়ে সুফল পেতে যাচ্ছে। আর ওই ডিজিটাল গড়ার স্বপ্নধারী ব্যক্তি মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ। তিনি সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে সম্প্রতি যোগদান করেছেন। এর আগে যশোর ডিজিটাল জেলা হিসেবে রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং তার নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোর বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। এ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জনপ্রশাসন পদক ২০১৬ লাভ করেন।
সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় মোস্তাফিজুর রহমানের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে সিলেট বিভাগ ডিজিটাল করার কথা। তিনি জানান, প্রথমেই গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি, মৎস্য ও স্বাস্থ্য খাতের প্রতি। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিষয়ও প্রাধান্য পাবে। সিলেট বিভাগ ডিজিটালে রূপান্তর করা তার স্বপ্ন। এ জন্য কাজও শুরু করে দিয়েছেন। মাস দুয়েক পর মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণ বিস্তারিত জানতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।
আইসিটি ডিভিশনের এটুআই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) থেকে বদলি হয়ে গত ৬ জুলাই মোস্তাফিজুর রহমান, পিএএ সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি বসে নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ‘ডিজিটাল সিলেট বিভাগ’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করছেন নানা পরিকল্পনা। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্র জানায়, মোস্তাফিজুর রহমান যোগদানের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো সিলেটেও বন্যা দেখা দেয়। ফলে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি দৃঢ়তার সঙ্গে বন্যা মোকাবিলা করেন তিনি।
বিসিএস দশম ব্যাচের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের ডিজিটাল সিলেট বিভাগ গড়ায় স্বপ্ন অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ তার হাত দিয়েই দেশের ডিজিটাল প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এর আগে অর্জন করেছেন ই-এশিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১১, শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক পুরস্কার ২০১২ (মাঠপর্যায়ে ই-সেবা বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে), শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক পুরস্কার ২০১৩ (আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে)। এছাড়া ডিজিটাল যশোর গড়ায় তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে জনপ্রশাসন পদক ২০১৬ প্রদান করা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সিলেট বিভাগের চারটি জেলায় ডিজিটালের অংশ হিসেবে চালু করা হচ্ছে ই-ফাইলিং। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অফিসে না থাকলেও তারা মোবাইল ফোনেই ওই ফাইল দেখে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন। কম সময়ে নিতে পারবেন তাদের সিদ্ধান্ত। এ লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে কার্যক্রম। তিনি বলেন, ই-ফাইলিং কার্যক্রম চালু হলে জনগণ স্বল্পসময়ের মধ্যে সেবা পাবে।
প্রতিনিধি