শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোরডটকম :
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ৪১ ব্যাটালিয়নের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। রবিবার (৮এপ্রিল) সিলেটের আখালিয়াস্থ ৪১ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে দিনব্যাপী নানামূখী আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয় প্রতিষ্ঠার ২২ তম বার্ষিকী। সকালে ৪১ ব্যাটালিয়ন অফিস প্রাঙ্গণে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা। এরপর সকল সৈনিক, অফিসার ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হয়। বিজিবি মহাপরিচালকের প্রদত্ত সুদৃশ্য কেক কাটেন ৪১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মানে প্রীতিভোজ আয়োজন কার হয়। বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজিবি’র ৪১ ব্যাটালিয়নের সৈনিক, কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালের ৮ই এপ্রিল ঠাকুরগাঁও থেকে যাত্রা শুরু করে এ ব্যাটালিয়ন। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন দূর্গম এলাকায় দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করায় ২০১১ সালে সিলেটে এ ব্যাটালিয়নকে মোতায়েন করা হয়। সিলেট জেলার তিনটি সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরের ১২৩ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে বিজিবির ৪১ ব্যাটালিয়ন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ৪১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল মোঃ আবুজার আল জাহিদ বিজিবিএম,পিবিজিএম(বার)। উপস্থিত বিজিবি সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে তিনি বিগত এক বছরে ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন। তিনি বলেন জনবল ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গত এক বছরে বিভিন্ন অপারেশনে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের চোরাচালানী পণ্য আটক করেছে এই ব্যাটালিয়ন। এছাড়াও অস্ত্র, মাদক ও বিদেশী মুদ্রা চোরাচালানের সাথে জড়িত ৩৯ জনকে আটক করে আইনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সীমান্তে বিজিবির দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের কারণে এ অঞ্চলের সীমান্ত এলাকা আগের চেয়ে অনেক শান্ত। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট বিজিবি সদর দপ্তরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো: নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য ৪১ ব্যাটালিয়ন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবেশী ভারতের ৩ টি বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে সীমান্তে যৌথ টহল, বিভিন্ন গণসচেতনামূলক কার্যক্রম ইত্যাদির মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশী নাগরিক আহত/নিহত হওয়ার ঘটনা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়াও এই ব্যাটালিয়ন পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমেও অংশ গ্রহন করে থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন। যেমন, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, সামাজিক বনায়নের আওতায় বৃক্ষ রোপন প্রভৃতি। ৪১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর মো: মেজবাহ উদ্দিন রাসেলের পরিচালনায় এই বর্নাঢ্য আয়োজনে ৪১ বিজিবি’র সৈনিক, কর্মকর্তা, সিলেটের ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।