Home » ছেলেধরা সন্দেহে নিহত মা

ছেলেধরা সন্দেহে নিহত মা

চার বছর বয়সী তাসলিমা তুবা। ফুটেফুটে শিশুটির সঙ্গী এখন কান্না। অথচ মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল তার। মেয়েকে ঘিরে মায়েরও ছিল আকাশ সমান রঙ্গিন স্বপ্ন।এজন্যই এক বছর ধরে বাংলা বর্ণমালাগুলোর সঙ্গে মেয়ের পরিচয় করানোর মায়ের অসীম চেষ্টা ছিল। মেয়েকে ভর্তির জন্য শনিবার সকালে স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হন তুবার মা তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। এখন তার অবুঝ মেয়েটির কী হবে?

ঢাকার উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাসলিমা বেগম রেনুকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মেয়েকে ভর্তির জন্য ওই স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে কথাবার্তায় সন্দেহ হলে লোকজন জড়ো হয়ে ছেলেধরা বলে পিটুনি দিলে তার মৃত্যু হয়। রেনুর বাবার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামে। তাসলিমা তুবা এখন খালাদের সঙ্গে রয়েছে।এদিকে, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রেনুর নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় নিহতের আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।

আরও পড়ুন ছেলেধরা সন্দেহে নিহত তাসলিমা ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করছে পুলিশপরিবারের সদস্যরা জানান,পারিবারিক কলহের কারণে প্রায় দুই বছর আগে স্বামী তসলিম হোসেনের সঙ্গে রেনুর ডিভোর্স হয়। তাদের সংসারে তাসফিক আল মাহি (১১) ও তাসলিমা তুবা নামের দুই সন্তান রয়েছে। বিচ্ছেদের পর ছেলে বাবার সঙ্গে থাকে। আর মেয়ে মায়ের সঙ্গে ছিল। রেনু মহাখালীতে বাসা ভাড়া করে থাকতেন।

নিহত রেনুর আত্মীয় নুর জাহান বেগম মুন্নি বলেন, তুবা শুধু বলে, আমার মা নেই, আমার মা কই? এটি তার অবুঝ মনের বলা। সে কান্নাকাটি করছে। তুবা এখন আমাদের কাছেই থাকবে। তার ভাগ্য কী আছে আল্লাহ ভালো জানেন।তাসলিমা বেগম রেনুর এক ভাই ও পাঁচ বোন। মাস্টার্স শেষ করা রেনু সবার ছোট। পড়ালেখা শেষে তিনি ঢাকায় আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছিলেন। দুই বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের তিনি প্রাইভেট পড়িয়ে আসছিলেন তিনি।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *