গত কয়েকদিন ধরে গুঞ্জন উঠেছিল মাশরাফি মুর্তজা এই বিশ্বকাপ খেলেই অবসর নেবেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন কানাঘুষা চললো, তিনি নাকি খেলবেনই না এই ম্যাচে। কিন্তু না, নামলেন অধিনায়ক। টসের পর ঘোষণা দিলেন, এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে মাশরাফি খেলবেন কিনা তা নিয়ে ছিল সংশয়। অবশেষ সকল সংশয় কাটিয়ে অ্যাওয়ে জার্সিতে মাঠে নামছেন বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক। এখন বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে তাকে বিদায়ী উপহার দেওয়ার অপেক্ষায় তামিম-সাকিবরা।
টস হারের পর মাশরাফি বলেছেন, ‘আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলি। কিন্তু তারাও ভালো খেলতে মাঠে নামছে। সহজ হবে না আমাদের জন্য। আর শতভাগ নিশ্চিত করতে চাই, এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ।’
২০০৩, ২০০৭ ও ২০১৫ সালের পর এনিয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলছেন মাশরাফি। তার অধীনে গত আসরে প্রথমবার বিশ্বকাপের নকআউট খেলেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আরও অনেক অর্জনের সাক্ষী হয়ে আছেন মাশরাফি। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারত বধেও তার অবদান ছিল অনেক।
২০০১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে জাতীয় দলে জায়গাটা পোক্ত করেন মাশরাফি। সুযোগ পেয়ে যান বাংলাদেশের ২০০৩ বিশ্বকাপ দলেও। কানাডা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে ইনজুরিতে ছিটকে যান বিশ্বকাপ থেকে।
বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ভারত বধে মাশরাফিই ছিলেন নায়ক। ২০০৭ সালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভারতকে ১৯১ রানে অলআউট করে টাইগাররা। শক্তিশালী এই ব্যাটিং লাইনআপের এমন ধস নামানোর পেছনে মূল কারিগর ছিলেন মাশরাফি। ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। লক্ষ্যে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে জিতে যায় বাংলাদেশ।
মাশরাফির হাত ধরেই বিশ্বকাপ বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ২০১৫ সালের অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ। ওই আসরে গ্রুপ পর্বে ছয় ম্যাচে ৩ জয় ও ২ হারে ৭ পয়েন্ট প্রথমবারের মতো শেষ আটে ওঠে টাইগাররা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচ জিতে তারা নিশ্চিত করে নকআউট। ওই ম্যাচে ৪৮ রানে দুই উইকেটও নেন তিনি।
শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শেষ হচ্ছে মাশরাফির বিশ্বকাপ ক্যারিয়ার। এই বিশ্বকাপটা একেবারেই ভালো কাটেনি তার। সেমিফাইনালে খেলার প্রত্যাশা নিয়ে ইংল্যান্ডে আসেন তিনি। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতলেও নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারতের কাছে হেরে সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। মাশরাফি নিজেও ভালো পারফর্ম করতে পারেননি। ৭ ম্যাচে মাত্র ১ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতে শেষ করলে এই আক্ষেপ যে অনেকটাই দূর হয়ে যাবে, সেটা বলাই যায়।
সুত্র: বাংলাট্রিবিউন
বার্তা বিভাগ প্রধান