যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের কর্মজীবী একটি শিশুর নাম শাহীন মোড়ল (১৪)। তার বাবা হায়দার আলীর বসতভিটে ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই।সম্প্রতি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়ে একটি ব্যাটারি চালিত ভ্যান কিনে ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন হায়দার আলী। ওই রোজগারের টাকায় সংসার, ঋণের কিস্তি, শাহীন ও তার বড় বোনের পড়াশোনা চলে।
সংসারে অভাবের কারণে বেশ কয়েকমাস আগে পড়াশোনা বন্ধ করে ভ্যানের হ্যান্ডেল ধরেছে শাহীন। তবে একটি ভ্যান হওয়ায় বাবা-ছেলে দুজনে শিফট মেনে ভ্যান নিয়ে বের হন।প্রতিদিনের মতো গতকাল শুক্রবার সকালে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় শাহীন। দুপুরের দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত শাহীনের ভ্যান রিজার্ভ নিয়ে পাশের উপজেলা সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ায় রওনা হন। পথে রাস্তার দুধারে পাট ক্ষেতের নির্জন স্থানে নিয়ে শাহীনের মাথা ফাঠিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তার পরিবারের শেষ সম্বল ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যান তারা। ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে শাহীন। পরে জ্ঞান ফিরলে শাহীনের কান্নার শব্দে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়।
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বলেন, ‘এলাকাবাসীর সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবেই কর্মজীবী শিশু শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর কারা তার ভ্যান রিজার্ভ করে এনেছিল এবং ভ্যান নিয়ে কোথায় পালাল তা উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।’ওসি আরও বলেন, ‘শনিবার এ ঘটনায় শিশু শাহীনের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছে। পুলিশ শিশুটির ফোনের কল লিস্ট তুলে তদন্ত শুরু করেছে।’
মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জহির রায়হান বলেন, ‘ঘটনাটি অমানবিক। যারা এ ঘটনায় জড়িত তারা মানুষরূপী পশু না হলে এমন শিশুর মাথা ফাটিয়ে ভ্যান ছিনতাই করতে পারত না।’এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শাহীন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে, শনিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।’
প্রতিনিধি