শুরুটা করি একটা পরিসংখ্যান দিয়ে। ইংল্যান্ড গত ২৭ বছর বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে জেতেনি। শেষবার জিতেছিল ১৯৯২ সাল, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। আর এই বিশ্বকাপে পরবর্তী তিনটি খেলা দলগুলোর সঙ্গে। বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের বিগত ২৭ বছরের ইতিহাস দেখে নতুন সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখতেই পারে!
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পর বাংলাদেশের সেমিফাইলের পথ দুর্বোধ্য হয়ে যায়, আবার গতকাল শ্রীলঙ্কার কাছে ইংল্যান্ডের হারের পর সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যায়। অনেক যদি কিন্তুর মাঝে দুলছে বাংলাদেশের সেমিফাইনালের স্বপ্ন। এই লেখাটা যদি, কিন্তু নিয়েই!
চলতি বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে একবার চোখ বুলানো যাক। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া শীর্ষে, পাঁচ ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে তার পরে নিউজিল্যান্ড। ছয় ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ড তিনে এবং চার ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ভারত চারে। ছয় ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা পাঁচ আর বাংলাদেশ সমান সংখ্যক ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান তিন পয়েন্ট করে নিয়ে সাত, আট ও নয়ে অবস্থান করছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান ছয়টি করে ম্যাচ খেললেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছে পাঁচটি ম্যাচ। আফগানিস্তান কোনো পয়েন্ট না নিয়ে একেবারে তলানীতে।
একেবারের শুরুর কথা দিয়ে আলোচনায় আসা যাক। ইংল্যান্ড যদি ২৭ বছরের ইতিহাস সত্য করে পরবর্তী তিনটি ম্যাচ হেরে যায় আর বাংলাদেশ যদি পরবর্তী তিনটি ম্যাচ জিতে যায় তাহলে বাংলাদেশ সরাসরি সেমিতেই খেলবে। তবে এ ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কাকেও তিনটি ম্যাচের মধ্যে একটিতে হারতে হবে। তাহলে নয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের হবে আট, বাংলেদেশের হবে ১১ আর শ্রীলঙ্কার হবে ১০। অর্থাৎ ইংল্যান্ড বাকি ম্যাচগুলো, শ্রীলঙ্কা দুটিতে আর বাংলাদেশ বাকি তিনটিতে জয় পেলেই সেমিফাইনাল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান যদি তাদের বাকি চারটি ম্যাচই জিতে যায় সেক্ষেত্রে তাদের পয়েন্টও হবে বাংলাদেশের সমান ১১। সেক্ষেত্রে রান রেট বিবেচনায় আসবে। রান রেটে এখন পর্যন্ত এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ (+০.২৭২), পিছিয়ে পাকিস্তান (-১.৯৩৩)। আর বাংলাদেশের রান রেট -০.৪০৭। তবে ইংল্যান্ড যদি পরবর্তী দুটি ম্যাচ জিতে যায় তাহলে সরাসরি সেমিতে চলে যাবে। সেক্ষেত্রে কাগজে-কলমের কোনো হিসেব আর কাজে আসবে না।
পয়েন্ট টেবিল বিবেচনা ও সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় এখন পর্যন্ত তিনটি দলের সেমিফাইনাল নিশ্চিত বলা যায়। দলগুলো হলো নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। ইংল্যান্ড এই তালিকায় সবার উপরেই থাকতো যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে না হারতো। স্বাগতিকদের হারের কারণেই নানা সমীকরণ এসেছে সামনে। গোল বলের খেলায় কোনো বিশ্বাস নেই, যেকোনো মুহুর্তে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আবার ইতিহাসও বলছে ইংলিশরা পারবে না!
শেষ করি মার্টিন লুথার কিংয়ের একটি উক্তি দিয়ে। ‘আমরা হয়তো অসংখ্য বার হতাশ হবো, কিন্তু তারপরও অসংখ্যবার আমাদের আশা করতে হবে।’ ১৬ কোটি বাঙালি অনেক যদি কিন্তুর মাঝে আশা নিয়ে তাকিয়ে আছেন সাকিব-মুশফিকদের দিকে। তারাই যে পারবেন আশা পূরণ করতে! সঙ্গে শুধু লাগবে একটু ভাগ্য।
প্রতিনিধি