সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘চিড়া-দধি দন্ড’ মহোৎসব আগামী ১৫ জুন শনিবার।
দন্ড মহোৎসব উপলক্ষে সিলেট ইসকন মন্দিরে দিনব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার ভোরবেলা মঙ্গল আরতির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, সকালে গুরুপুজা ও ভাগবত সেমিনারের পর থাকছে চিড়া-দধি দিয়ে তৈরি রাধামাধবের মহাপ্রসাদ।
শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত থেকে পানিহাটি চিড়া-দধি দন্ড লীলা সম্বন্ধে জানা যায়, ‘চিড়াদধি দন্ড’ ঘটনাটি ঘটেছিল পানিহাটিতেই। তাই এই মহোৎসবের সঙ্গে পানিহাটির নাম জড়িয়ে গেছে। নিত্যানন্দ প্রভু তৎকালীন জমিদার গোবর্ধন দাসের একমাত্র পুত্র রঘুনাথ দাস গোস্বামীকে শাস্তি দিয়েছিলেন।
ইসকন বাংলাদেশের অন্যতম সন্ন্যাসী শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ জানান, অপরাধটি ছিল- শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর আশীর্বাদ না নিয়ে জমিদার পুত্র রঘুনাথ দাস শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপাশীষ লাভ করার প্রয়াস করেছিলেন। নিত্যানন্দ প্রভু এটা জানতে পেরে পানিহাটিতে অবস্থানকালে রঘুনাথকে শাস্তি দেন। তাঁর শাস্তি ছিল-জমিদার পুত্র রঘুনাথকে নিত্যানন্দ-গৌরাঙ্গের সমস্ত ভক্তদের চিড়া-দধি খাওয়াতে হবে। যদিও তৎকালীন হুগলি জেলার শ্রীকৃষ্ণপুরের জমিদার গোবর্ধন মজুমদারের একমাত্র পুত্র রঘুনাথ দাস এই দন্ড মাথা পেতে নিয়েছিলেন।
শোনা যায়, সেই জমিদারের মাসিক আয় ছিল বিশ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা। তাঁর ছেলে রঘুনাথ দাস সেসময় হাজার হাজার ভক্তদের নিজের হাতে চিড়া-দধি প্রসাদ বিতরণ করেছিলেন।
মহারাজ আরও জানান, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সন্ন্যাসীবেশে পুরীধামে অবস্থান করলেও নিত্যানন্দ প্রভুর আহ্বানে এই অপ্রাকৃত মহোৎসবে তাঁর দিব্য স্বরূপে পানিহাটিতে যোগদান করেছিলেন। নিত্যানন্দ প্রভুর হাত থেকে তিনি ভোগও গ্রহণ করেছিলেন। কয়েকজন পার্ষদ ছাড়া উপস্থিত অন্য কেউ সেদিন মহাপ্রভুর এই দিব্যলীলা দর্শন করতে পারেননি।
এদিকে সারা বিশ্বের মতো ইসকন সিলেট মন্দিরেও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এই উৎসব স্তিমিত করে দেয় হিংসা-দ্বেষ এর বাতাবরণকে, সকলকে আবদ্ধ করে দেয় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রেম-রজ্জুতে। হাজার-হাজার ভক্তের আগমনে মিলনমেলায় পরিণত হবে ইসকন সিলেট মন্দির।
নির্বাহী সম্পাদক