Home » এবার আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন বাংলাদেশের

এবার আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন বাংলাদেশের

বাংলাদেশ কি এবার বিশ্বকাপ জিতবে? এর উত্তরে হয়তো অনেকেই হ্যাঁ বলতেই পারেন। তবে লাল-সবুজের দলের যে এবার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তরুণ ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে গড়া দারুণ একটি দল নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ খেলতে গেছে মাশরাফির নেতৃত্বাধীন বাংলাদশ দল। তাদের আছে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন।বাংলাদেশের বর্তমান দলটিকে অনেকেই ১৯৯৬ সালের শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে তুলনা করছেন। অর্জুনা রানাতুঙ্গার নেতৃত্বে সেবার বিশ্বকাপ জিতে চমকে দিয়েছিল পুরো বিশ্বকে। মাশরাফির নেতৃত্বে দলটির মধ্যে অনেকেই সেই সম্ভাবনা দেখছেন। 

বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিক উন্নতি চোখে পড়ার মতো। ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে, ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে উঠে চমকে দেয়। আর দ্বিপক্ষীয় সিরিজে হারিয়েছে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে। তা ছাড়া গত বছরই তিন-তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলেছে।ঘরের মাঠের ত্রিদেশীয় সিরিজ, আবুধাবিতে এশিয়া কাপ, নিদাহাস ট্রফি এবং বিশ্বকাপের প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওঠে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিতে প্রথম কোনো সাফল্য পায় বাংলাদেশ। তাই বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাসের একেবারেই তুঙ্গে রয়েছে মাশরাফি বাহিনী।

আর এই দলে আছেন পঞ্চপাণ্ডব, যাঁদের অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ সমৃদ্ধ। মাশরাফি বিন মুর্তজা ২০৯, মুশফিকুর রহিম ২০৫, সাকিব আল হাসান ১৯৭, তামিম ইকবাল ১৯৩ ও মাহমুদউল্লাহ ১৭৫ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। তাঁরা পারেন প্রয়োজনে দলকে দারুণ সব সাফল্য এনে দিতে।তা ছাড়া একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার রয়েছেন দলে। সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান ও সাইফউদ্দিনের মতো ক্রিকেটার রয়েছেন।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ‘বিশ্বকাপ জেতার সামর্থ্য বাংলাদেশের অবশ্যই আছে। তবে কজাটা খুবই কঠিন। অবশ্য আমি বলব অসম্ভব নয়। আমাদের কিছু মাইনাস পয়েন্ট আছে। এর আগে আমরা এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারিনি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিলাম। তাই এ ধরনের টুর্নামেন্টে ভালো করা একটা অভ্যাসের ব্যাপার।’আসরে চাপমুক্ত ক্রিকেট খেলতে চায় বাংলাদেশ। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই। বিশ্বকাপ জিততে হবে বা সেমিফাইনালে খেলতে হবে। তবে আমাদের সেমিতে খেলার আকাঙ্ক্ষা আছে। সামর্থ্যও আছে। নির্ভর হয়েই খেলতে চাই আমরা।’

বাংলাদেশের সফল্যে আশাবাদী সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘এবারের বিশ্বকাপে আমাদের দারুণ সুযোগ শিরোপা জয়ের। অবশ্য সাফল্য পেতে হলে আমাদের ধারাবাহিক পারফর্ম করতে হবে। যদি ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সম্ভব হয়, অবশ্যই নকআউট পর্বে যেতে পারব আমরা। সম্ভব হলে আরো ভালো কিছু করতে পারব। তবে আমি নিশ্চিত, এবার আমাদের দল ভালো করবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, বাংলাদেশ এবার বিশ্বকাপ জিতবে। তবে এই স্বপ্ন পূরণের জন্য অনেক কিছুই আমাদের পক্ষে যেতে হবে।’বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছিল ১৯৯৯ সালে। প্রথম অংশগ্রহণ ছিল স্বপ্নের মতো, সাব্কে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল, জিতেছিল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও। সে ধারাবাহিকতায় টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছিল বাংলাদেশ।

তবে ২০০৩ বিশ্বকাপ ছিল দুঃস্বপ্নের মতো, কানাডা ও কেনিয়াসহ সব দলের কাছে হেরেছিল। ২০০৭ সালে আবার দারুণ সাফল্য, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাশক্তিদের হারিয়ে চমকে দেয়। ঘরের  মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপে ছিল চরম ব্যর্থতা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যথাক্রমে ৫৮ ও ৭৮ রানে অলআউট হয়েছিল।তবে ২০১৫ বিশ্বকাপে দারুণ সাফল্য পায় মাশরাফিরা, প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। এবারের বিশ্বকাপে কি আরো বড় সাফল্য পাবে বাংলাদেশ।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *