বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতে এ পর্যন্ত (রবিবার বিকাল ২টা) ২ হাজার ২৪৩টি বাড়িঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তবে, কোনও ফসলের ক্ষতি হয়নি। সোমবার বিকেল ৫টার মধ্যে উপকূলীয় ১৯ জেলার ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। একসপ্তাহ পর পাওয়া যাবে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য। রবিবার সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ্ মো. কামাল এই তথ্য জানান।
সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলছে জানিয়ে শাহ্ কামাল বলেন, ‘জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নেতৃত্বে গঠিত দু’টি কমিটি ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ করছে। কমিটি দু’টি খোঁজখবর নিয়ে তাৎতক্ষণিক একটি প্রতিবেদন দেবে। এজন্য কমিটিকে তিন দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অন্য প্রতিবেদনটি পাওয়া যাবে ৭দিনে।’
শাহ কামাল জানান, ‘ফণী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে দুর্বল হয়ে। তাই ফসলের কোনও ক্ষতি হয়নি। খুলনা ছাড়া অন্য জেলার মাঠের ধান যেখানে ৮০ শতাংশ পেকে গেছে, সেখানে দ্রুত কেটে আনার জন্য বলেছিলাম। কৃষকরাও ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। কিন্তু খুলনা অঞ্চলের ১১ হাজার হেক্টর জমির ধান না পাকায় আশঙ্কা করেছিলাম, ওই অঞ্চলের ধান আমরা রক্ষা করতে পারবো না। কারণ, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছিলাম, ফণীর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের ১৯ জেলায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হবে। ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস প্রবাহিত হবে। কিন্তু ফণী দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় জলোচ্ছ্বাস হয়নি। ওই গতিতে বাতাসও প্রবাহিত হয়নি। তাই ফসলের পুরোটাই রক্ষা করা গেছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে গবাদি পশুসহ কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ডিসি-ইউএনওরা কাজ করছেন। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে পেলে সব জানা যাবে। আমরা সেই অনুযায়ী দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কাজ করবো।’
তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা বেশি। বেশ কিছু অঞ্চলে বাঁধ ভেঙে গেছে। সরকারিভাবে এখনপর্যন্ত চূড়ান্ত হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে, ফণীসৃষ্ট পানিতে ৩৩ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থা ‘ব্র্যাক’।

বার্তা বিভাগ প্রধান