বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উড়িষ্যা উপকূল পাড়ি দিয়ে ঝড়টি আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশেও। ক্রমাগত ঘনীভূত হতে থাকা এ ঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফণী’। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পাশাপাশি ঝড়টি নিয়ে মানুষের মনে কিছু প্রশ্নও উঁকি দিচ্ছে। এর নাম ‘ফণী’ কেন দেওয়া হলো? এর অর্থই বা কি? কোন ভাষার শব্দ এটি?
গত
কয়েকশো বছর ধরে আটলান্টিক মহাসাগর এলাকায় উৎপন্ন হওয়া ঝড়গুলোর নাম দিয়ে
আসছে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের মানুষেরা। শুরুতে নিজেদের অঞ্চলের ঝড়গুলোকে
বিভিন্ন নামে ডাকতো তারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত এই পরিস্থিতি না
বদলালেও ১৯৪৫ সাল থেকে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে শুরু হয় ঝড়ের আনুষ্ঠানিক
নামকরণ। বিভিন্ন দেশের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে জাতিসংঘের বিশ্ব
আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল নামকরণ চূড়ান্ত করে
থাকে। পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা এবং সাধারণ মানুষের কাছে পূর্বাভাস
ও সতর্কতা বোধগম্য করতেই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়ে থাকে।
বস্তুত ঝড়ের নামকরণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশের পাঠানো নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নামকরণ করা হয়। একেক অঞ্চলের ঝড়ের নাম চূড়ান্ত করার দায়িত্বটি ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাতে ন্যস্ত থাকে। যেমন-উত্তর ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ঝড়গুলোর নামকরণের দায়িত্ব ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের। এক্ষেত্রে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আট দেশ বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড থেকে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রস্তাব করা হয়। নামের প্রস্তাব আসার পর ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরে বৈঠকের মাধ্যমে প্রস্তাবিত নামের মধ্য থেকে তৈরি হয় তালিকা। আর সে তালিকা অনুযায়ীই পর্যায়ক্রমে নামকরণ হয়।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের সেই তালিকা অনুযায়ীই এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফণী’। এ নামটি দিয়েছে বাংলাদেশ। এর অর্থ সাপ বা ফণা তুলতে পারে এমন প্রাণী। পরবর্তী ঝড়ের নাম হবে ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী ভায়ু। তারপরে আরো ছয়টি ঝড়ের জন্য এখনও নাম তালিকায় রয়েছে। সেগুলো হলো হিক্কা, কায়ার, মাহা, বুলবুল, পাউয়ান এবং আম্ফান।
বার্তা বিভাগ প্রধান