শৈশব থেকেই খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন এঁকেছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে ‘চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বপ্নের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে বাঁকবদল ঘটে তার ক্যারিয়ারে; নৃত্যে থিতু না হয়ে ১৭ বছর বয়সে নাম লেখান টিভি নাটকে।
শুরুর কয়েকটা বছর পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে খানিকটা কাঠখড় পোড়াতে হলেও দিনে দিনে টিভিনাটকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন ইভানা। সম্প্রতি ‘এ শহরের পাখিগুলো একা’, ‘দেওয়ালের ওপারে তুমি’সহ বেশ কয়েকটি নাটকে সহজাত অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন দর্শকদের।
দর্শকদের ভালোবাসা তার দায়িত্ব অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে জানিয়ে ইভানা বলেন, অভিনয়ের টিকে থাকতে গেলে আমাকে নিজের সেরাটাই দিতে হবে।
“আজকাল নাটকে নায়িকার অভাব নেই। যত বেশি ভালো অভিনয় করতে পারব তত বেশি প্রাধান্য পাব। নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য এখন প্রচুর মুভি দেখেছি। নিজে নিজে অভিনয় অনুশীলন করেছি। আমার সেই ডেডিকেশনটা কাজে লেগেছে।”
অভিনয়ে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য চলচ্চিত্র দেখার পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতাও তাকে ঋদ্ধ করেছে বলে জানান তিনি।
“লাইফে এমন এমন কিছু ঘটনা আছে সেগুলো আমার অভিনয়ের ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। যার ফলে অল্প বয়সেই আমি ম্যাচিউরড হয়ে গেছি। অ্যাক্টিংয়ের ম্যাচিউরিটি আনার চেষ্টা করেছি। মেকি অভিনয়ের চেষ্টা করিনি। এমনকি কাউকে অনুসরণও করিনি।”
কাউকে অনুসরণ না করলেও জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম ও আফরানা নিশোর অভিনয় পছন্দ করেন তিনি। আদর্শ মানেন বলিউডের অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতকে।
অভিনয়ে এখন নিজেকে পুরোপুরি সঁপে দিলেও শুরুতে দ্বিধান্বিত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “শুরুর দিকে বয়স কম ছিল। অনেক কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। নাচ করব নাকি অভিনয় করব-সেটা নিয়ে দ্বিধায় ছিলাম; ফলে অভিনয়ে মন দিতে পারিনি। এখন অভিনয়েই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
কিন্তু স্বপ্ন তো ছিল খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী হওয়ার। সেই পথ থেকে সরে এলেন কেন?
কারণ হিসেবে তিনি জানান, বাংলাদেশে নৃত্যশিল্পীদের দাম কম দেওয়া হয়। নাচটাকে অন্যভাবে দেখা হয়। সুযোগ-সুবিধাও কম।
“আমি তো নিজের টাকায় চলি। ফলে সেটাই করতে হবে যেটা দিয়ে আমি জীবনধারণ করতে পারব। আর ড্যান্সে অনেক পলেটিক্সও আছে।”
অভিনয়ে ইতোমধ্যে চার বছর কাটিয়ে দিলেন এ অভিনত্রী। কোনও বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল কি না জানতে চাইলে বেশ কয়েকবার বাধার মুখেও পড়তে হয়েছিল বলে জানালেন তিনি।
“প্রতিটি লাইনে খারাপ-ভালো থাকে। মিডিয়ারগুলো প্রকাশ পায় আর বাইরের ঘটনাগুলো প্রকাশ পায় না। অনেক কিছুই ফেইস করতে হয়। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে নিজেকে কিভাবে হ্যান্ডেল করা যায় সেটাই হলো স্মার্টনেস।”
‘সেরা নাচিয়ে’ প্রতিযোগিতার সময় তাকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছিল জানিয়ে ইভানা বলেন, তাদের কথায় কান না দিয়ে আমি সামনে এগিয়ে চলেছি।
দুই পরিচালক ইমরাউল রাফাত ও মাবরুর রশিদ বান্নাহর যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
বার্তা বিভাগ প্রধান