Home » ইয়াছিনরে ছাড়বেন না’

ইয়াছিনরে ছাড়বেন না’

আপনারা ওই শয়তান ইয়াছিনরে ছাড়বেন না। গলায় ছুরি ধরে হাত-মুখ বেঁধে আমারে তুলে নিয়ে নির্যাতন (ধর্ষণ) চালাইছে। পরে মাইরা ফেলাইতেও চাইছে। আমি কোনো মতে তার হাত থেকে বাঁচছি।’ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মৃত্যুশয্যায় থাকা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের এক কিশোরী পুলিশের কাছে লিখিত জবানবন্দিতে এমন কথা বলেছে।

উপজেলার ৯ নম্বর উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর মালামারি গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে ইয়াছিন মিয়া ময়মনসিংহের একটি কলেজে ইলেক্ট্রিক্যাল বিষয়ে ডিপ্লোমা করছে। তারই প্রতিবেশী অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে শুক্রবার রাতে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে সে। পরে রাতেই ইয়াছিনের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এক বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নেয় মেয়েটি। পরদিন শনিবার সকালে গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করা তার বাবাকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু বাবা বাড়ি ফেরার আগেই লজ্জা ও অপমানে কিশোরীটি দুপুরের দিকে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গুরুতর অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই দিন রাতে ইয়াছিনকে আটক করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরীটি রোববার ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই আবদুল করিমের কাছে লিখিত জবানবন্দি দেয়। এতে সে উল্লেখ করে, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যার কিছু পর ইয়াছিন তাকে ডেকে নিয়ে যায় বাড়ির অদূরে। সেখানে নিয়ে তাকে আপত্তিকর কথা বলে। চিৎকার করতে চাইলে তাকে বলা হয়, এতে তারই সম্মান যাবে। ওই সময় অজ্ঞান হওয়ার ভান ধরে কোনো মতে সেখান থেকে ঘরে ফিরে আসে সে। ঘরে গিয়ে নিজের ডায়েরিতে ঘটনাটি লিখতে শুরু করে। ওই সময় তার ঘরে গিয়ে ডায়েরিটিও নিয়ে যায় ইয়াছিন।’ জবানবন্দিতে মেয়েটি আরও উল্লেখ করে, ‘রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হলে ইয়াছিন তাকে গলায় ছুরি ধরে হাত-মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায় স্থানীয় একটি স্কুলের কাছে। সেখানে তার ওপর নির্যাতন চালায়। নির্যাতন শেষে তাকে হত্যারও চেষ্টা করে ইয়াছিন। একপর্যায়ে নিজের হাতের বাঁধন কোনো মতে খুলে ইয়াছিনকে লাথি দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে সে। ইয়াছিনও তার পিছু নেয়। কিছুদূর যাওয়ার পর এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হলে ইয়াছিন একটু পেছনে পড়ে যায়। পরে সে বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।’ জবানবন্দির শেষ দিকে সে বলে, ‘আগে সব কথা বলতে পারি নাই। এখন সব কইলাম। আপনারা ওই শয়তান ইয়াছিনরে ছাড়বেন না।’

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আহম্মদ কবীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েটি তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে লিখিত জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে তারা তাৎক্ষণিক মূল অভিযুক্তকে আটক করেছে। মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সমকাল

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *