Home » প্যারিসে আগুনে পুড়ল ৮৫০ বছরের পুরোনো গির্জা

প্যারিসে আগুনে পুড়ল ৮৫০ বছরের পুরোনো গির্জা

দুটি বিশ্বযুদ্ধের ন্যূনতম আঁচও পড়েনি। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিছু হয়নি। অথচ কয়েক ঘণ্টার আগুনে অনেকটাই ধ্বংস হয়ে গেছে প্যারিসের অন্যতম নিদর্শন নটর ডেম ক্যাথেড্রাল। ৮৫০ বছরের পুরোনো ওই গির্জাটিকে ফ্রান্সের জাতীয় প্রতীকের একটি হিসেবেই ধরা হয়। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রথম ওই ভবনে আগুন দেখা যায়।এরপরই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ছাদে। গির্জার ছাদে আগুন জ্বলতে থাকে। ওই সময় প্রকাণ্ড জোরে শব্দও শোনা যায়। সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও সিএনএন এ তথ্য জানায়। সিএনএন জানিয়েছে, আগুন নেভানোর কাজ করার সময় ফায়ার সার্ভিসের একজন আহত হয়েছেন।

দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতক ধরে গির্জাটি নির্মাণ করা হয়। দুই শতক ধরে নির্মিত ওই গির্জা কয়েক ঘণ্টার আগুনে অনেকটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, গির্জাটির মূল কাঠামো এবং দুটি বেল টাওয়ার রক্ষা করা গেছে।গির্জার উঁচু মিনার ধ্বংস হওয়ার আগে তা পুরোনো ওক গাছের কাঠামোগুলো পুড়িয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জ্যঁ-ক্লদে গ্যালেট বলেছেন, ‘প্রধান কাঠামোটি পুরোপুরি ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষা করা গেছে এবং সংরক্ষিত আছে।’

গির্জাটির মধ্যে ছিল গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকর্ম। এগুলো রক্ষা এবং টাওয়ার রক্ষার জন্য রাতভর সব ধরনের চেষ্টা করেন উদ্ধারকর্মীরা।ঘটনার পরই গির্জার চারপাশে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। এ সময় অনেকে কাঁদছিলেন, কেউ প্রার্থনা করছিলেন। প্যারিসের অনেক গির্জায় বাজছিল ঘণ্টা।আগুন লাগার মূল কারণ এখনো জানা যায়নি।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি শুরু করা সংস্কারকাজের সঙ্গে এর সংযোগ থাকতে পারে। কিছুদিন আগে গির্জার পাথরে ফাটল দেখা দিলে ওই সংস্কারকাজ শুরু করা হয়। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এ ঘটনাকে ‘ভয়াবহ বিয়োগান্তক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের সবার মতো আমিও ব্যথিত।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আবার তৈরি করব নটর ডেম।’ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি ছিল ফ্রান্সের সব মানুষের। যারা কখনই সেখানে যাননি, তাদের জন্যও।’প্রতিবছর এক কোটি ৩০ লাখ দর্শনার্থী এটি দেখতে যান, যা ফ্রান্সের আরেক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্থাপত্য আইফেল টাওয়ার দর্শনার্থীর চেয়ে বেশি।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *