মা আর শিশুকে আটক করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্মকর্তারা, ভয়ে চিৎকার করে কাঁদছে একরত্তি শিশু। বৃহস্পতিবার ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো পুরস্কার জিতল এই ছবিটিই। বিচারকরা জানান, হন্ডুরাসের মা সান্দ্রা সানচেজ এবং তার মেয়ে ইয়েনেলা অবৈধভাবে মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করে ফেলেছিল। গেটি ইমেজেসের জন মুরের তোলা এই ছবিটি গত বছর ‘মানসিক’ সহিংসতার এক অন্যরূপ দেখিয়েছিল গোটা বিশ্বকে।আতঙ্কে চিৎকার করে কাঁদা ওই বাচ্চর ছবি বিশ্বব্যাপী প্রকাশিত হয়েছিল এবং হাজার হাজার অভিবাসী এবং তাদের সন্তানদের আলাদা করার জন্য ওয়াশিংটনের বিতর্কিত নীতি সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল।
মার্কিন কাস্টমস ও বর্ডার সুরক্ষা কর্মকর্তারা পরে বলেছিলেন, যাদের সন্তানদের থেকে আলাদা করা হয়েছিল সেই দলের মধ্যে ছিল না ইয়েলেনা ও তার মা, কিন্তু জনসাধারণের আশঙ্কার কারণে গত বছরের জুন মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নীতিটি পুনর্বিবেচনা করেন।গত বছর ১২ জুন রিও গ্র্যান্ডে উপত্যকায় এক অমাবস্যার রাতে মুরে ইউএস বর্ডার প্যাট্রোল এজেন্টদের ছবি তুলছিলেন। সেখানেই সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছে এমন এক গোষ্ঠীর দেখা মেলে। মার্কিনি ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও সম্প্রচারকারীর এক সাক্ষাত্কারে মুরে বলেন, “আমি ওদের চোখে ভয় দেখতে পাচ্ছিলাম, ওদের মুখে এক ভয়ের ছায়া দেখতে পাচ্ছিলাম।”
কর্মকর্তারা ওদের নাম জানাতেই, মুরে বলেন যে সে স্যান্দ্রা সানচেজ এবং তাঁর বাচ্চাটিকে একধারে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখেন তিনি। মুরে এক দশক ধরে আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “আমি হাঁটু গেড়ে বসে যাই, খুব কয়েক মুহূর্তের মধ্যে খুব অল্প ফ্রেমে ওই ছবিটা ওঠে। আমি অন্যরকমের এক গল্প বলতে চেয়েছিলাম।”৫১ বছর বয়সী ফটোগ্রাফার বলেন, “আমার কাছে এটা মানবতার দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করার একটি সুযোগ ছিল যা প্রায়শই পরিসংখ্যানের সাথে সম্পর্কিত। আমি মনে করি এ ধরনের সমস্যা, অভিবাসনের সমস্যা কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়, সারা বিশ্বের।”
বিচারপতিরা ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো স্টোরি অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড’ এর বিজয়ী হিসেবে ২০১৮ সালে ডাচ-সুইডিশ ফটোগ্রাফার পিটার টেন হুপেনের তোলা মার্কিন সীমান্তে অভিবাসী ক্যারাভেনের ছবিটি বেছে নেন।আমস্টারডামের আয়োজকরা বলেন, বিশ্বজুড়ে ৪,৭৩৮ জন ফটোগ্রাফারের তোলা ৭৮,৮০১ টি ছবির মধ্যে থেকে এই বছরের বিজয়ী নির্বাচিত হয়েছে।
প্রতিনিধি