সার্টিফিকেট জালিয়াতি বন্ধে ডিজিটাল সত্যায়ন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেছেন, ‘সার্টিফিকেট, জমির কাগজ ও পাসপোর্ট জালিয়াতি বন্ধে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য ডিজিটাল সত্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে কাগজপত্র সত্যায়িত করা সম্ভব হবে।’তিনি আজ শুক্রবার দুপুরে সিলেটের গোলাপগঞ্জের একটি পার্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক্স-স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, সিলেটের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইনে সার্টিফিকেট সত্যায়িতসহ অন্যান্য কনস্যুলার সেবা অতি অল্প সময়ে প্রদান করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে সার্টিফিকেট সত্যায়িত করার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে তাদের ডাটাবেজের মাধ্যমে দ্রুত স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট সত্যায়ন করতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশী মিশনে ২৪ ঘন্টা হটলাইন চালু করা হবে। বিমানবন্দরে হয়রানি বন্ধে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও তদারকি করা হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে এবং সেখানে সবাই সুখে-শান্তিতে থাকবে। কিন্তু আমাদের অনেক প্রজেক্ট যথা সময়ে বাস্তবায়ন হয় না। এগুলো বাস্তবায়নে কিভাবে আরো গতি আনা যায় সে বিষয়ে আমাদেরকে আরো গবেষণা করতে হবে এবং সচেতন বৃদ্ধি করতে হবে।’তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে এই স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন। এই রাষ্ট্রপরিচালনার জন্য যা যা প্রয়োজন তাও দিয়ে গেছেন। বড় বড় ৭৬ সংস্থার সদস্য পদ অর্জন করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের বড় দায়িত্ব হচ্ছে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা। যা হবে উন্নত, সমৃদ্ধশালী, স্থিতিশীল, অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। যেখানে ধনি-দরিদ্র্যের আকাশসম ফারাক থাকবে না। যেখানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে।’ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন সোনার বাংলার পথে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা বিজয়ের জাতি, কঠিন পথ অতিক্রম আমাদেরকে বিজয়ী হতে হবে। কারণ, মনে রাখতে হবে বাঙালি বিজয়ের জাতি। আমরা পারবো, আমরা বিজয়ী হব।’
এর আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুরান ঢাকা ও বনানীর ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা নেওয়ার সময় হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত হলে এবং বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ হলে ভবিষ্যতে এরকম বড় ধরনের ক্ষতির থেকে রক্ষা পাবে দেশবাসী।’মন্ত্রী বলেন, ‘রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর আমাদের গার্মেন্টগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক বেশি উন্নত হয়েছে। কিন্তু, বড় বড় ভবনের সেফটি এন্ড সিকিউরিটি এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন উন্নত হচ্ছি। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তি এখনও পুরোপুরি সংযুক্ত করা সম্ভব হয়নি। উন্নত দেশগুলোতে যতগুলো ভবন হয় সেগুলোতে জরুরি মুহূর্তের জন্য স্প্রিং ক্লাব, স্কেইপ এক্সিট থাকে। ভবনগুলো নির্মাণ হয় রাস্তার পাশে। রাস্তায় সবসময় ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকে এবং সেখান থেকে পানি পাওয়া যায়। বাংলাদেশেও সড়ক নির্মাণের সময় ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বাসাবাড়ি নির্মাণের সময় রাস্তার জন্য প্রশস্ত জমি রাখা জরুরি। অন্যথায়, কোথাও আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও এম্বুলেন্স প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে নিজেদেরই ক্ষতি হয়ে যাবে।’অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্স-স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন সিলেটের আহ্বায়ক, সিলেট
মুরারিচাঁদ কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সালেহ আহমদের সভাপতিত্বে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল বিশ্বাস, মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমানসহ সিলেটে অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বিকেল সাড়ে ৩টায় মুরারিচাঁদ কলেজ গেইট নির্মাণ ও খেলার মাঠের সীমানা প্রাচীর গেইট নির্মাণ এবং টিলাগড় পয়েন্টে মেজর মোতালিব ভাস্কর্য উদ্বোধন এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে কনসার্ট ফর লাইফ, ডুনেট ব্লাড, সেইভ লাইফ-এ যোগ দেন।
প্রতিনিধি