Home » সুপ্রভাত ও জাবালে নূর নিষিদ্ধ রাতারাতি সুপ্রভাত হয়ে যাচ্ছে সম্রাট

সুপ্রভাত ও জাবালে নূর নিষিদ্ধ রাতারাতি সুপ্রভাত হয়ে যাচ্ছে সম্রাট

ঢাকা মহানগরীতে ‘সুপ্রভাত’ ও ‘জাবালে নূর’ পরিবহনের সব বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বুধবার বিআরটিএর উপপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) শফিকুজ্জামান ভূঞা স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।

মঙ্গলবার রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকায় ‘সুপ্রভাত’ পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ আজও চলে। এ বিক্ষোভের পর পরই বিআরটিএর পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। 

ওই সব কাগজপত্র বিআরটিএ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বুধবার থেকে রাজধানীতে ঢাকা মহানগরীর (রুট নং এ-১৩৮) উত্তরা রানীগঞ্জ থেকে সদরঘাটে চলাচলরত সুপ্রভাত প্রাইভেট লিমিটেডের সব বাস ও মিনিবাস এবং ঢাকা মহানগরীর (রুট নং এ-১৮৪) বসিলা থেকে আব্দুল্লাহপুরে চলাচলরত জাবালে নূর পরিবহন লিমিটেডের সব বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সুপ্রভাত ও জাবালে নূর পরিবহনের সব বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

গাজীপুরা এলাকার চা দোকানী ইসমাইল হোসেন জানান, আজকে সারাদিন ‘সুপ্রভাত স্পেশাল’ বাস সার্ভিস কাউন্টার থেকে বের হতে দেখেননি তিনি। বাস মালিকদের তাদের বাসের নাম মুছে ফেলতে দেখা গেছে। তবে কী কারণে বাসের নাম পাল্টানো হচ্ছে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি।

টঙ্গী সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলম জানান, মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় সুপ্রভাত বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহামেদ চৌধুরী নিহত হন। তাই বাস মালিক কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের ভাঙচুরের হাত থেকে বাঁচতে এ কৌশল অবলম্বন করছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসচালক ও তাদের সহকারীরা জানায়, ‘সুপ্রভাত’ বাস সার্ভিসটি সদরঘাট থেকে উত্তরা পর্যন্ত চলাচলের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতার প্রভাব খাটিয়ে গাজীপুর মহানগরের গাজীপুরা পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করাচ্ছে। এ পরিবহনের ৫০ থেকে ৬০টি বাসের অনুমতি থাকলেও দুই থেকে আড়াইশ বাস প্রতিদিন ঢাকা থেকে গাজীপুরা চলাচল করেছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের (দক্ষিণ) সহকারী কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সুপ্রভাত’ বাস সার্ভিসের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। সুপ্রভাত পরিবহনের কোনো বাস গাজীপুরে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে নাম পরিবর্তন করে মহাসড়কে চলাচল করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, যে কোনো পরিবহন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে অন্য পরিবহন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করতে পারে। তবে যে প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করবে সেই প্রতিষ্ঠানটির বৈধ লাইসেন্স আছে সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা গেট এলাকায় ‘সুপ্রভাত’ পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। ঘটনার পর ওই বাসের রুট পারমিট বাতিল, দোষী চালকের ফাঁসির দাবিসহ আট দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বুধবারও রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের অবরোধ আন্দোলন হয়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দেন তারা। পরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করে আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সব কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। 

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *